আমরা এই আর্টেকেলে নবীজির স্ত্রীদের নাম অর্থসহ একটি তালিকা উপস্থাপন করেছি, যা আপনার মেয়ে বেবির নাম রাখতে সহায়ক হবে।
নবীদের সর্দার প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর নাযিলকৃত সর্বশেষ গ্রন্থ আল কুরআনুল কারীমে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের বিশেষ মর্যাদা ও সম্মান দান করেছেন। রাসূল (সাঃ)-মের স্ত্রীদেরকে মুমিনদের মা বলে সম্বোধন করা হয়েছে। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন বলেন..
“নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের (বিশ্বাসীগণদের) মাতা”। (সূরা আল-আযহাব-৬)
রাসূল (সাঃ)-মের স্ত্রীগণ সাধারণ নারী ছিলেন না। তাই মহান আল্লাহ তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন….
“হে নবী পত্মীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মতো নও।” (সূরা আল আযহাব-৩২)
বর্তমানে অনেক মুসলিম নারীগণ বিবাহের পর নিজের নামের পাশে স্বামীর নাম যোগ করে পরিচয় দিতে থাকেন। পক্ষান্তরে মহানবী (সাঃ)-এর পবিত্র সহধার্মিণীগণ রাসূল (সাঃ)-মের স্ত্রী হবার সৌভাগ্য লাভ করেও তারা নামের শেষে রাসূল (সাঃ)-মের নাম যোগ করেনি বরং নবীজির স্ত্রীগণ তাদের নামের শেষে পিতার নাম যোগ করেই পরিচয় দিতেন। আর নামের শেষে পিতার নাম যোগ করে পরিচয় দেওয়াই হচ্ছে আল কুরআনের প্রকৃত শিক্ষা। মহান আল্লাহ পাক বলেনঃ
“তোমরা তাদেরকে পিতৃ পরিচয়ে ডাক, এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায় সঙ্গত”। (সূরা আল আযহাব-৫)
এ সম্পর্কে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
“কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে ডাকা হবে তোমাদের নামে এবং তোমাদের পিতার নামে।”
মুহাম্মদ (সাঃ)-মের স্ত্রীদের নাম অর্থসহ!
প্রিয় পাঠক পাঠিকা, আপনার নবজাতক শিশু কন্যার নাম যাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের নাম অনুকরণে একটি নাম নির্বাচন করতে পারেন সেজন্য আজ আমি নবীজির স্ত্রীদের নাম ও নামের অর্থগুলি আমার বাংলা পোস্ট.কমের মাধ্যমে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। প্রিয় নবীজির স্ত্রী হবার সৌভাগ্য যারা লাভ করেছিলেন সেসকল সৌভাগ্য ও মর্যাদাবান নারীদের নাম ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় নিচে তুলে ধরা হলো। তাহলে চলুন নবীজির স্ত্রীদের তালিকা ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় জানা শুরু করি..
০১. খাদিজাহ ( Khadijah ) অর্থ: অসম্পূর্ণ।
পূর্ণ নামঃ খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ (khadijah binti khuwailid) ছিলেন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-মের প্রথম স্ত্রী, ফাতেমা‘র মা ও সর্ব প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী ব্যক্তি ও নারী, এবং একজন সফল ব্যবসায়ী। রাসূল (সাঃ) সর্বপ্রথম প্রিয় স্ত্রী খাদিজাকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিয়েছিলেন এবং উম্মুল মুমিনিন ( বিশ্বাসীগণদের মাতা) হযরত খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ বিনা প্রশ্নে নবীজির দাওয়াত কবুল করেছিলেন। পবিত্র চরিত্রের জন্য মা খাদিজাহ বিনতে খুওয়াইলিদ ইসলাম গ্রহণের পূর্বেই তাহিরা উপাধি লাভ করেছিলেন যার অর্থ পবিত্র। তিনি খাদিজাতুল কোবরা নামেও পরিচিত ছিলেন। আরও জানতে মা খাদিজা (রাঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনি আর্টিকেলটি পড়ে নিতে পারেন।
০২. সাওদাহ (Sawda) অর্থ: খেজুর গাছের পূর্ণভূমি।
পূর্ণ নামঃ সাওদাহ বিনতে জামআ ( sawda bint jam’a) । তিনি প্রথমে আস-সাকরান ইবনে আমরকে বিয়ে করেন এবং তাদের ছেলে আব্দুর রহমান ইবনে সাকরান জালুলা যুদ্ধে নিহত হন। প্রথম স্বামী আস-সাকরান ইবনে আমর মৃত্যুর পরে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) সাওদা বিনতে জাম’আ কে বিয়ে করেন এবং উম্মুল মুমিনিন মর্যাদা লাভ করেন। আরও জানতে মা সাউদা (রাঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনি পড়ে নিতে পারেন।
০৩. আয়িশাহ (Aishah) অর্থ: জীবন্ত।
পূর্ণ নামঃ আয়িশা বিনতে আবু বকর (Aishah binti abu bakar)। উম্মুল মুমিনিন মা আয়িশাহ সিদ্দীকা ছিলেন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর তৃতীয় স্ত্রী ও প্রসিদ্ধ সাহাবী হযরত আবু বকর (রাঃ) কন্যা। পিতা আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) ছিলেন রাসূল (সাঃ) এর একজন বিশ্বস্ত সাহাবী ও সহচর ছিলেন। উম্মুল মুমিনিন মা আয়িশাহ সিদ্দীকা (রাঃ) ইসলামের ঐতিহ্যগত ইতিহাসেও তার অবদান অনস্বীকার্য এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে মা আয়েশা (রাঃ) এর জীবনি সম্পর্কিত একটি দীর্ঘ আর্টিকেল রয়েছে, বিশদ জানতে পড়তে পারেন। নিচে একটি ভিডিও আছে, উপভোগ করুন।
০৪. হাফসাহ (Hafsah) অর্থ: একত্রিত।
পূর্ণ নামঃ হাফসা বিনতে ওমর( hafsah binti umar)। নবীজির স্ত্রী ও উম্মুল মুমিনিন। মা হাফসা (রাঃ) ছিলেন দ্বিতীয় খলিফা ও প্রসিদ্ধ সাহাবী হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) এর মেয়ে। তিনি প্রথমে হুনাইস ইবনে হুজাইফাকে বিয়ে করেন ও পরে বিধবা হন। ইদ্দত শেষ হবার পর পিতা ওমর (রাঃ) প্রথমে হযরত উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) ও পরে হযরত আবু বকর সিদ্দিকী (রাঃ) কে হাফসা (রাঃ) কে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। এই দুই সাহাবী প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে তখন বাবা ওমর নবী মুহাম্মদ (সাঃ)কে বিয়ের প্রস্তাব দিলে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তিনি হাফসাকে বিয়ে করেন। আরও জানতে উম্মুল মুমিনীন হাফসা (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী আর্টিকেলটি পড়ুন।
০৫. জয়নব (Zaynab) অর্থ: সুগন্ধি।
পূর্ণ নামঃ জয়নব বিনতে খুযায়মা (Zaynab Bint Khuzayma)। তিনি আরবের সুলাইম গোত্রের মেয়ে। জয়নব (রাঃ) প্রথম স্বামীর নাম আব্দুল্লাহ ইবনে জাহাশ (রাঃ)। সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে জাহাশ (রাঃ) উহুদ যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করলে প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ) জয়নব বিনতে খুযায়মাকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। মহিলা সাহাবী জয়নব (রাঃ) নবীজির বিয়ের প্রস্তাবে সম্মত হলে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) জয়নব (রাঃ)কে ৪০০ দিরহাম মোহরানা দিয়ে জিলহজ্জ মাসের শেষেরদিকে বিয়ে করেন। নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সাথে বিবাহের তিন মাসের মাথায় উম্মুল মুমিনিন জয়নব বিনতে খুযায়মা (রাঃ) মৃত্যুবরণ করেন এবং জান্নাতুল বাকিতে সমাহিত করা হয়।
০৬. জুওয়াইরিয়া (Juwayriyya) অর্থ: প্রবাহিত ধারা।
পূর্ণ নামঃ জুওয়াইরিয়া বিনতে আল হারিস (Juwayriyya bint al harith) । মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর স্ত্রী ও মুসলমানদের মা। উম্মুল মুমিনিন জুওয়াইরিয়া (রাঃ) তিনি ছিলেন বনু মুস্তালিক গোত্রের প্রধান আল হারিস ইবনে আবি দিয়ারের কন্যা। যখন রাসূল (সাঃ) জুওয়াইরিয়া (রাঃ)-কে বিয়ে করেন তখন তাঁর বয়স ছিল ২০ এবং রাসূলের (সাঃ) বয়স ছিল ৫৮। রাসূল (সাঃ) জুওয়াইরিয়া (রাঃ) কে ৫ হিজরি সনে বিবাহ করেছিলেন।
০৭. মাইমূনাহ (Maymunah) অর্থ: বারকাত প্রাপ্তা।
পূর্ণ নামঃ মাইমুনা বিনতে আল হারিস আল হিলালিয়াহ (Maymunah binti al-harith al hilaliyah) । নবীজির স্ত্রী ও মুসলমানদের মাতা। মাইমুনা (রাঃ) এর প্রকৃত নাম ছিল বাররাহ কিন্তু রাসূল (সাঃ) তাঁর নাম পরিবর্তন করে মায়মুনা রেখেছিলেন। মায়মুনা (রাঃ) ছিলেন রাসূলের (সাঃ) স্ত্রীদের মধ্যে সর্বশেষ স্ত্রী।
০৮. সাফিয়া (Safiyah) অর্থ: ছাটাইকৃত ।
পূর্ণ নামঃ সাফিয়া বিনতে হুওয়াই (Safiyah binti huyay )। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী ও উম্মুল মুমিনিন (মুসলমানদের মাতা) । তিনি ছিলেন মদিনার ইহুদী গোত্র বনু নাদিরে গোত্র প্রধান হুওয়াই ইবনে আকতাবের কন্যা। প্রথমে সাফিয়া (রাঃ) সালাম ইবনে মিশকামের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবব্ধ হন ও পরে তালাক প্রাপ্ত হন।
০৯. মারিয়া (Maria) অর্থ: বাছুরওয়ালি গাভী ।
পূর্ণ নামঃ মারিয়া আল কিবতিয়া (Maria al qibtiyya)। রাসূলের (সাঃ) এর স্ত্রী ও উম্মুল মুমিনিন। মারিয়া বিনতে শাম’উন তিনি মারিয়া আল-কিবতীয়া নামে অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি একজন মিশরীয় খৃষ্টান নারী ও কৃতদাসী ছিলেন। তৎকালীন আলেক্সান্দ্রীয় কিবতীয় অর্থডক্স রাজ্যপাল মুকওকিস তাঁকে ও তাঁর বোন সিরিন বিনতে শামউনকে রাসূলের (সাঃ) নিকট উপহার স্বরূপ প্রেরণ করেন। হযরত মারিয়া (রাঃ) ইসলাম গ্রহন করলে রাসূল (সাঃ) তাকে বিবাহ করেন।
১০. রায়হানা (Raihanah) অর্থ: ফুলের তোড়া ।
পূর্ণ নামঃ রায়হানা বিনতে যায়েদ (raihanah binti zaid)। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর স্ত্রী ও মুসলিমদের মাতা। হযরত রায়হানা (রাঃ) তিনি ছিলেন বনু নাযির গোত্রের একজন ইহুদি নারী। তিনি ইসলাম গ্রহণের রাসূল (রাঃ) রায়হানা (রাঃ)-কে বিবাহ করেন।
১১. উম্মে সালামাহ (Umme Salamah) অর্থ: নরম হাত-পা ওয়ালী মা।
পূর্ণনামঃ উম্মে সালামাহ হিন্দ বিনতে আবি উমাইয়া (Umme salamah hind bint abu umayya)। উম্মে সালামাহ (রাঃ) এর প্রকৃত নাম ছিল হিন্দ আল-মাখজুমিয়া। তিনি ও তাঁর প্রথম স্বামী আবু সালামা ইবনে আল আসাদ প্রথম যুগে ইসলাম গ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। উহুদ যুদ্ধে উম্মে সালামাহ (রাঃ) স্বামী মারাত্মকভাবে আহত হন এবং শেষ অবধি মারা যান। এ সময় উম্মে সালামাহ (রাঃ) এর সন্তান সংখ্যা চারজন। এই অসহায় অবস্থা থেকে উম্মে সালামাহকে (রাঃ) পরিক্রাণ দিতে মহানবী (সাঃ) তাকে বিবাহ করেন।
১২. উম্মে হাবীবাহ (Umme Habibah) অর্থ: প্রিয় পাত্রীর মা।
পূর্ণ নামঃ রামালাহ বিনতে আবি সুফিয়ান (Ramlah binti Abu Sufyan) । নবীজির স্ত্রী ও উম্মুল মুমিনিন। তিনি উম্মে হাবীবাহ নামে বেশি পরিচিত। রামালাহ বিনতে আবি সুফিয়ান (রাঃ) ছিলেন আবু সুফিয়ান বিনে হারব ও সাফিয়া বিনতে আবি আল আ’স এর মেয়ে। প্রাথমিক জীবনে উম্মে হাবিবাহ (রাঃ) উবায়দুল্লাহ ইবনে জাহাশের স্ত্রী ছিলেন। প্রথম স্বামী উবায়দুল্লাহ হাবশায় হিজরতের পর ইসলাম ত্যাগ করলে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর বংশধরদের উপর করুণা ও অশেষ রহমত বর্ষণ করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বোচ্চ প্রশংসিত এবং সম্মানের অধিকারী।
নবীজির স্ত্রীদের নাম বিষয়ে পাঠকদের প্রশ্নের উত্তর!
মুহাম্মদ (সাঃ)-এর স্ত্রীদের নাম ও পরিচয় সম্পর্কে জানতে পাঠকেরা নিচের প্রশ্নগুলি প্রায় সময় করে থাকেন:
প্রশ্নঃ নবীজির কয়জন স্ত্রী ছিলেন?
উত্তরঃ ইসলামের ইতিহাসবিদদের মতে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর স্ত্রী ছিলেন ১১ জন, কারো মতে ১৩ জন, যাদের অধিকাংশই উম্মুল মুমিনীন (বিশ্বাসীদের মা) হিসেবে পরিচিত।
প্রশ্ন: নবীজির কোন স্ত্রী প্রথম ইসলাম গ্রহন করেছিলেন?
উত্তরঃ হযরত খাদিজা (রাঃ) ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম নারী ছিলেন এবং তিনি মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রথম স্ত্রীও ছিলেন।
প্রশ্নঃ নবীজির স্ত্রীদের নামগুলো কি বেবি নাম হিসেবা গ্রহণযোগ্য?
উত্তরঃ অবশ্যই! উম্মুল মুমিনীনদের নামগুলো ইসলামিকভাবে সম্মানিত এবং পরম পবিত্রতা বহন করে। আর তাই এগুলো মেয়েদের নাম হিসেবে গ্রহণযোগ্য ও ইতিবাচক অর্থ বহন করে। বিশেষত্বঃ খাদিজা, আয়েশা, হাফসা, সাওদা ও সালামা নামগুলো ব্যাপক জনপ্রিয় ও জনসমৃদ্ধ।
প্রশ্ন: নবীজির স্ত্রীরা কি সকলেই মুসলিম ছিলেন?
উত্তর: না, মুহাম্মদ (সাঃ) এর কয়েকজন স্ত্রী ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন পরে, যেমন: সাফিয়া ও মারিয়া।
সাফিয়া বিনতে হুয়াই, যিনি মূলত একটি ইহুদি গোত্রের (বনু নাদির) ছিলেন। কিন্তু তিনি ইসলাম গ্রহণের পরেই নবীজি তাঁকে বিয়ে করেছিলেন। এই বিয়ে মুসলিম ও ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করার একটি কৌশলগত পদক্ষেপ ছিল।
মারিয়া ক্বিবতিয়া, ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে নবীজির স্ত্রী হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি ইসলাম গ্রহণের পর মুহাম্মদ (সাঃ) তাকে বিবাহ করেন। তিনি ছিলেন মিশরের একজন খৃস্টান নারী, তাকে মিশরের শাসক মুকাওকিস নবী (সাঃ)-কে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন। এবং তাঁর গর্ভেই নবীজির পুত্রসন্তান ইব্রাহিমের জন্ম হয়। ইব্রাহিম শৈশবেই মারা গিয়েছিলেন। আরও দেখতে পারেনঃ নবীজির ছেলে ও মেয়েদের নামসমূহ থেকে।
প্রশ্ন: নবীজির স্ত্রীদের নাম রাখা কি ইসলামিকভাবে সম্মানজনক?
উত্তর: হ্যাঁ, ইসলামিক কালচারে নবীজির স্ত্রীদের নামগুলো অত্যন্ত সম্মানিত। সন্তানদের জন্য এই নাম রাখা মুসলিম পরিবারে পূণ্যময় হিসাবে বিবেচিত হয়।
প্রশ্ন: উম্মুল মুমিনিন বলতে কাকে বুঝায়?
উত্তর: উম্মুল মুমিনিন শব্দের অর্থ “বিশ্বাসীদের মাতা”-এটি নবীজির সকল স্ত্রীদের সম্মানজনক উপাধি। তারা মুসলিম উম্মাহর শিক্ষিকা ও রোল মডেল ছিলেন।
প্রশ্ন: নবীজির কোন স্ত্রী সবচেয়ে বেশি হাদিস বর্ণনা করেছেন?
উত্তর: নবীজির স্ত্রীদের মধ্যে হযরত আয়েশা (রাঃ) সবচেয়ে হাদিস বর্ণনা করেছেন, যা ইসলামী জ্ঞানের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে।
প্রশ্ন: নবীজির স্ত্রীরা কিভাবে ইসলামের বার্তা ছড়িয়েছিলেন?
উত্তর: নবীজির স্ত্রীদের মধ্যে অনেকে শিক্ষা, উপদেশ ও দ্বীনের দাওয়াতের মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্যের বার্তা নারীদের মধ্যে ছড়িয়ে ছিলেন। হযরত খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ) এর প্রথম দৃষ্টান্ত।
প্রশ্ন: নবীজি কেনো বহু বিবাহ করেছিলেন?
উত্তর: সমালোচকরা নবীজির বহু বিবাহ নিয়ে সমালোচনা, গালমন্দ করে। কিন্তু মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর বহু বিবাহের পিছনে ব্যক্তিগত নয়, বরং ধর্মীয়, সামাজিক ও শিক্ষাগত উদ্দেশ্য ছিল। তাঁর মধ্যে নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
- সামাজিক সহযোগিতা ও দয়া: অনেকে ছিলেন বিধবা, যুদ্ধাহত সাহাবীর স্ত্রী বা নিঃসহায় নারী। তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার জন্য মুহাম্মদ (সাঃ) তাদেরকে বিবাহ করেছিলেন।
- দ্বীনের দাওয়াত প্রসার: বিভিন্ন গোত্র ও জনপদের নারীদের সাথে বিবাহের মাধ্যমে ইসলামের বার্তা পৌঁছানো সহজ হয়। এটি ছিল গোত্রগত সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যম।
- শিক্ষা ও হাদীস সংরক্ষণ: হযরত আয়েশা (রাঃ) সহ কিছু স্ত্রী নবীজির জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক সংরক্ষণ ও প্রচারে ভূমিকা রেখেছেন-হাদিস, আচরণ, নিয়মাবলী ইত্যাদি।
- আদর্শ পারিবারিক জীবন শিক্ষা দেওয়া: নবীজি (সাঃ) তাঁর স্ত্রীদের প্রতি যে আচরণ দেখিয়েছেন, তা মুসলিমদের জন্য আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হয়।
“নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় আমাদের জন্য শিক্ষা। তাঁর স্ত্রীদের জীবন পাঠ করে আমরা বুঝতে পারি, নারীর মর্যাদা ও দ্বীনের মূল্য কত গভীর।” — Rubel, Amar Bangla Post writer
আরও ইসলামিক নাম জানতে পড়তে পারেন …
01. ৩১৩ জন পুরুষ সাহাবীদের নাম
02. প্রিয় নবীজির গুণবাচক নাম সমূহ
03. ২৬ জন নবীদের পবিত্র নামের তালিকা
04. নবীজির ছেলে ও মেয়েদের অর্থসহ নামের তালিকা
প্রিয় পাঠক পাঠিকা, নবীজির স্ত্রীদের নাম অর্থসহ পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে, তাহলে আপনার শিশু কন্যার জন্য এই সুন্দর ইসলামিক নামগুলো থেকে একটি নির্বাচন করুন, এবং আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুতে ভুলবেন না। আপনার শেয়ারই আরও অনেককে সাহায্য করতে পারে। এবং আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করতে পারেন। ধন্যবাদ, আল্লাহ হাফেজ।
For more updates, please follow our Facebook, Twitter, Instagram , Linkedin , Pinterest , Tumblr And Youtube channel.
শুভ দিন। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর স্ত্রীদের নাম ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এগিয়ে যান।
মাশাআল্লাহ খুব ভালো
আলহামদুলিল্লাহ
অনেক অনেক ভালো লাগছে।
মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে বরকত দান করুন৷
আমিন।
জাযাকাল্লাহ খায়ের ভাই
আলহামদুলিল্লাহ
জাজাকাল্লাহ খাইরান ভাই
জাযাকাল্লাহ খায়রান।
ধন্যবাদ ভাই রাজিব হোসেন।
ধন্যবাদ আপনাকে,,, কিন্তু, আমার মনে কনফিউসনের তৈরি তখনি হয় যখন ওয়াজে সব আম্মাজানের নামের সাথে আরোও অনেক কিছু যুক্ত করা থাকে। তখন আর মহানবির বিবিদের নাম কি সিরিয়াল ভাবে দিলে ভালো হতো না,,কার পরে কে আসছে,, এই আরকি।।
এমনিতে পরে ভালোই লাগলোও,,,,
আল- বিদা,,,,,,
আর্টিকেলে বিবাহের সাল উল্লেখ করা আছে। ধন্যবাদ।
যয়নব বিনতে জাহাশ রাযি.-এর প্রথম স্বামীর নাম আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশ লেখা হয়েছে। এটা ভুল। কারণ আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশ তো তার আপন ভাই। তাছাড়া যয়নাব রাযি.-এর আগে বিয়ে হয়েছিল কি না, তা সঠিকভাবে জানা যায় না। প্রথম বিয়ে হযরত যায়েদ ইবনে হারেসা রাযি.-এর সাথে হয়।
মাশাআল্লাহ।
মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর