প্রথম সাক্ষাতে মানুষের সাথে কেমন আচরণ করবেন? কেমন আচরণের মাধ্যমে লোকেদের প্রভাবিত করবেন তা শিখতে সম্মানিত লেখকের এই আর্টিকেলটি পড়ুন। সম্মানিত লেখক প্রথম সাক্ষাতে মানুষের সাথে কোমল আচরণের প্রভাব বর্ণনা করেছেন। তাহলে চলুন পড়া শুরু করি…
প্রথম সাক্ষাতেই কোমল হোন (লাইফ হ্যাকিং টিপস ১৯)
মিশরের গ্রামাঞ্চলে একটি প্রথা প্রচলন ছিল। বাসর রাত স্বামী বাসরঘরে কোনো বাক্সে একটা বিড়াল লুকিয়ে রাখত। স্ত্রীকে নিয়ে ফুলশয্যার কাছে এসে সে বাক্সটি খুলতেই বিড়ালটি বেরিয়ে আসতো। বিড়াল দেখে স্বামী কৃত্রিম রাগ প্রকাশ করে ওটাকে গলাটিপে মেরে ফেলত। এভাবে স্ত্রীর সামনে নিজের ক্ষমতা জাহির করত।
আপনি ধারণা করতে পারেন তারা এটা কেন করত?
প্রথম সাক্ষাতেই যেন স্ত্রীর মস্তিঙ্কে স্বামীর কঠোর মনোবৃত্তির ছবি অঙ্কিত হয়ে যায়।
আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নিয়ে একটি কলেজে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিলাম তখন একজন প্রবীণ শিক্ষক আমাকে উপদেশ দিতে গিয়ে বললেন, ‘ছাত্রদের সামনে প্রথম যখন তুমি লেকচার দিতে দাঁড়াবে, তখন খুব কঠোর মনোভাব দেখাবে। চোখ লাল করে তাদের দিকে তাকাবে। যেন প্রথম দিন থেকেই তারা তোমাকে ভয় পায় এবং তোমার ব্যক্তিত্বের শক্তি সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়ে যায়।’
তাঁর সে উপদেশ স্মরণ রেখেই আমি এ অধ্যায় লিখতে শুরু করেছি। আমি বিশ্বাস করি—প্রথম দর্শনেই দর্শকের মস্তিঙ্কে আপনার ভাবমূর্তির ৭০% গেঁথে যায়। এটি একটি সর্বজন স্বীকৃত বিষয়। একে মনস্তাত্ত্বিক চিত্র বলা যেতে পারে।
‘প্রাতিষ্ঠানিক আচরণ-কৌশল উন্নয়ন’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে কয়েকজন অফিসার আমেরিকা গেল। প্রশিক্ষণের প্রথম দিন তারা খুব ভোরে একটি বিশাল হলরুমে সমবেত হলো। প্রথমদিন হিসেবে তারা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছিল। এমন সময় হঠাৎ প্রশিক্ষক মহোদয় হলে প্রবেশ করলেন। সঙ্গে সঙ্গে হলরুম নীরব হয়ে গেল। কিন্তু একজন প্রশিক্ষণার্থী তখনও মুচকি হাসছিল। প্রশিক্ষক তা লক্ষ্য করলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি উচ্চস্বরে বললেন, ‘এই তুমি হাসছ কেন?’
‘মাফ করবেন, আমি হাসি নি।’
‘না, তুমি হাসছিলে।’
প্রশিক্ষক তাকে যথারীতি জেরা করতে লাগলেন। ‘তুমি মনোযোগী ছাত্র নও। আজকের প্রথম ফ্লাইটেই তুমি বাড়ি ফিরে যাবে। আমি তোমার মতো ছাত্রকে পড়াতে পারব না।’
শিক্ষকের এসব কথায় ছাত্রটির চেহারা মলিন হয়ে গেল। সে একবার শিক্ষক, একবার সহপাঠীদের দিকে তাকাচ্ছিলো। আর চেহারা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছিল। এরপর শিক্ষিক তাঁর দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দরজার দিকে ইশারা করে বললেন, ‘বের হয়ে যাও।’
ছাত্রটি হতবাক হয়ে গেল। সে কোনো রকমে রুম থেকে বের হয়ে গেল। শিক্ষক এবার অন্য ছাত্রদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি ড. …। আমি তোমাদেরকে এই এই বিষয়ে পাঠদান করব। কিন্তু তাঁর আগে তোমাদের একটি ফরম পূরণ করতে হবে। এতে তোমরা নিজেদের নাম লিখবে না। তিনি ফরম বিতরণ করলেন। ফরমে পাঁচটি প্রশ্ন ছিল—
০১. তোমার শিক্ষকের আচরণ সম্পর্কে তোমার মতামত কি?
০২. শিক্ষকের পাঠদান পদ্ধতি তোমার কাছে কেমন মনে হয়?
০৩. তিনি কি ভিন্ন মত গ্রহণ করেন?
০৪. তাঁর কাছে পুনরায় শিক্ষা গ্রহণ করার ব্যাপারে তোমার কেমন আগ্রহ রয়েছে?
০৫. তুমি কি প্রতিষ্ঠানের বাইরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করবে?
প্রতিটি প্রশ্নের সামনে কয়েকটি সম্ভাব্য উত্তর দেয়া আছে। খুব ভাল, ভাল, মোটামুটি। দুর্বল/না।
ছাত্ররা ফরম পূর্ণ করে শিক্ষকের কাছে জমা দিল। শিক্ষক সেগুলোকে এক পাশে রেখে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ আচরণের প্রভাব সম্পর্কে বক্তব্য দিতে শুরু করলেন। হঠাৎ তিনি বললেন, ‘আহা! তোমাদের সহপাঠীকে এ পাঠ থেকে কেন বঞ্চিত করব?’
এরপর তিনি ক্লাসরুম থেকে ‘বহিষ্কৃত’ প্রশিক্ষণার্থীর কাছে গিয়ে করমর্দন করলেন এবং মুচকি হেসে তাকে ক্লাসরুমে নিয়ে এলেন।
এরপর শিক্ষক তাকে বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ‘একটু আগে আমি তোমার সঙ্গে যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই রাগ করেছিলাম। আমার ব্যক্তিগত একটি সমস্যার কারণে এমন হয়ে গেছে। এজন্য আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তুমি অবশ্যই মনোযোগী ও আগ্রহী ছাত্র। পরিবার-পরিজন ছেড়ে তোমার এখানে আসাটাই এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
আমি তোমাকে এবং তোমার সহপাঠীদেরকে শিক্ষার প্রতি এই অনুরাগের কারণে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আমার কত বড় সৌভাগ্য! তোমাদের মতো বিদ্যোৎসাহী ও উচ্চশিক্ষিত ছাত্রদেরকে আমি পাঠদান করতে পারছি।
এরপর শিক্ষক কোমল আচরণ ও হাস্য রসিকতার মাধ্যমে পুরো পরিবেশটাকে পাল্টে দিলেন। এখন সবার চোখে মুখে খুশির ঝিলিক। এর কিছুক্ষক পর তিনি নতুন কিছু ফরম হাতে নিয়ে বললেন, ‘তোমাদের সহপাঠী তো ফরম পূরণ করতে পারে নি। তাই সবাই ফরমটি নতুন করে পূরণ কর। কী বল? সবাই প্রফুল্লচিত্তে রাজি হলো।
শিক্ষক সবাইকে আবার ফরম দিলেন। সকলে তা পূরণ করে পুনরায় জমা দিল। প্রথমবারে ফরমগুলোতে ‘দুর্বল/ না’ এর ঘরগুলোর প্রত্যেকটিতে টিক চিহ্ন পড়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়বারের ফরমসমূহে ‘দুর্বল/ না’ ও ‘মোটামুটি’ এর ঘরে একটিও টিক চিহ্ন নেই। সবগুলো টিক চিহ্ন ‘খুব ভাল’ ও ‘ভাল’ এর ঘরে।
দুই ফরমের উত্তরের পার্থক্য দেখে শিক্ষক হাসলেন। তারপর ছাত্রদেরকে বললেন, তোমরা যা দেখলে তা এর বাস্তব প্রমাণ যে, মন্দ আচরণ প্রধান কর্মকর্তা ও তাঁর অধীনস্থদের মাঝে কাজের পরিবেশে কিরূপ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে? এ বিষয়টি তোমাদের সামনে প্রমাণ করার জন্যই আমি তোমাদের সহপাঠীর সঙ্গে এমন কৃত্রিক দুর্ব্যবহার করেছি। অবশ্য এটা করতে গিয়ে সে দুর্ব্যবহারের শিকার হলো। খেয়াল করে দেখ, সামান্য সময়ের ব্যবধানে তোমাদের সাথে আমার ব্যবহার পরিবর্তন করে কীভাবে তোমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে দিলাম। ’
এটা মানুষের স্বভাব, সহজাত প্রবৃত্তি। এজন্য বিষয়টির প্রতি নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে সেসব সেবাপ্রার্থী যাদের সঙ্গে আমাদের জীবনে শুধু একবারই দেখা হয়ে থাকে। বিশ্বমানবতার মহান শিক্ষক রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রথম সাক্ষাতেই মানুষের হৃদয় জয় করে নিতেন।
মক্কাবিজয়ের পর ইসলামের শেকড় যখন দৃঢ় হলো তখন মদিনায় রাসূল (সাঃ)-এর কাছে বিভিন্ন গোত্রের প্রতিনিধি দল আসতে শুরু করলো। এরই ধারাবাহিকতায় আবদে কায়েস গোত্রের প্রতিনিধি দলও রাসূল (সাঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলো।
রাসূল (সাঃ) তাদেরকে আসতে দেখে তারা বাহন থেকে নামার আগেই তাদের অভ্যর্থনা জানাতে এগিয়ে গেলেন। তিনি তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘স্বাগতম! হে প্রতিনিধি দল! লাঞ্ছনা বা গঞ্জনা নয়, আমাদের পক্ষ হতে তোমাদের প্রতি সুসংবাদ।’ তারাও বাহন থেকে নেমেই রাসূল (সাঃ) কে সালাম জানাতে ছুটে এলো।
এভাবে অভ্যর্থনা পর্ব শেষ হওয়ার পর তারা বললো, ‘আল্লাহর রাসূল! আপনার কাছে আসার পথে ‘মুযার’ গোত্রের মুশরিকদের একটি জনপদ পড়ে। তাই যুদ্ধ নিষিদ্ধ মাসগুলোতে যখন যুদ্ধের দামামা বন্ধ হয়ে যায় তখন আমরা আপনার কাছে আসতে পারি। এ ছাড়া অন্য সময়ে আমরা আপনার কাছে ইচ্ছে হলেও আসতে পারি না। এ ছাড়া অন্য সময়ে আমরা আপনার কাছে ইচ্ছে হলেও আসতে পারি না। অতএব আমাদেরকে সংক্ষিপ্ত এমন কিছু আমল বলে দিন, যা পালন করলে আমরা জান্নাতে যেতে পারব এবং সেসব আমলের প্রতি অন্যদেরকেও আহবান করতে পারব।’
রাসূল (সাঃ) বললেন, আমি তোমাদেরকে চারটি কাজের আদেশ দিচ্ছি, আর চারটি কাজ করতে নিষেধ করছি। আদেশগুলো হলো—
০১. আল্লাহকে বিশ্বাস করবে।
আল্লাহকে বিশ্বাস করার মর্ম কি তোমরা জান?
তারা বললো, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভাল জানেন।’
রাসূল বললেন, আল্লাহকে বিশ্বাস করার অর্থ হলো—এ মর্মে সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।
০২. নামায কায়েম করা।
০৩. যাকাত প্রদান করা।
০৪. গনীমতের এক পঞ্চামাংশ বায়তুল মালে জমা দেয়া।
আর তোমাদেরকে চারটি জনিস করতে নিষেধ করছি। নিষিদ্ধ বস্তু হলো-
০১. দুব্বা।
০২. নাকির।
০৩. হানতাম।
০৪. মুয়াফফাত।
এগুলোতে তৈরি করা মদপান থেকে বিরত থাকবে। (সহীহ বুখারী: ৪০২০, সহীহ মুসলিম: ২৩)
একবার রাসূল (সাঃ) সাহাবীদের সঙ্গে রাতের বেলা সফর করছিলেন। রাতের অন্ধকারে তারা অনেক পথ অতিক্রম করলেন। রাতের শেষ প্রহরে একটু বিশ্রামের জন্য তারা যাত্রাবিরতি করলেন। সারারাত সফরের পর সবাই গভীর ঘুমের কোলে ঢলে পড়লেন। তারা ঘুমে এমনভাবে নিমজ্জিত হয়ে গেল যে, সূর্য উদিত হয়ে মাথার ওপর চলে এলো। সর্বপ্রথম আবূ বকর (রাঃ)-এর ঘুম ভাঙ্গলো। তারপর ওমরের। আবূ বকর (রাঃ) রাসূল (সাঃ)-এর মাথার পাশে বসে আস্তে আস্তে তাকবীর ধ্বনি দিতে লাগলেন। তিনি তিনি ধীরে ধীরে আওয়াজ বাড়াতে লাগলেন। এক পর্যায়ে রাসূল (সাঃ) জাগলেন। তিনি সবাইকে নিয়ে জামাতে ফজরের নামায আদায় করলেন। নামায শেষে তিনি তাকিয়ে দেখলেন, কাফেলার একজন এক প্রান্তে বসে আছে। নামাযে অংশগ্রহণ করে নি। রাসূল (সাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি আমাদের সঙ্গে নামায পড়লে না কেন?’ সে বললো, ‘আমার ওপর গোসল ফরয হয়েছে। কিন্তু গোসল করার পানি নেই।’
রাসূল (সাঃ) তাকে মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করার আদেশ দিলেন। সে তায়াম্মুম করে নামায পড়ল।
এরপর রাসূল (সাঃ) সবাইকে যাত্রা করার আদেশ দিলেন। কারো কাছে পানি ছিল না। সবাই খুব পিপাসা লাগল। পথে কোনো কুপ বা পানির সন্ধানও পাওয়া গেল না।
ইমরান বিন হোসাইন (রাঃ) বলেন, আমরা পথ চলতে চলতে হঠাৎ এক মহিলার সাক্ষাৎ পেলাম। মহিলা ছিল উটে আরোহী। উটটির পিঠে পানির বড় বড় দুইটি মশক ছিল। আমরা তাঁর কাছে পানির সন্ধান জানতে চাইলাম। সে বললো, ‘আশেপাশে কোথাও পানি নেই।’
আমরা বললাম, ‘তোমার বাড়ি থেকে পানি কত দূরে?’
সে বললো, ‘পূর্ণ একদিন এক রাতের পথ।’
আমরা বললাম, ‘তুমি আমাদের সঙ্গে রাসূল (সাঃ)-এর কাছে চল।’
সে বললো, ‘রাসূল আবার কে?
সে আমাদের পানির সন্ধান দিতে পারে—এ আশায় তাকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে এলাম। রাসূল (সাঃ)-এর সঙ্গে মহিলাটির সাক্ষাৎ হলে তিনি তাঁর কাছে পানির সন্ধান জানতে চাইলেন। সে আমাদেরকে যা বলেছিল, রাসূলকেও তাই বললো। অতিরিক্ত সে রাসূল (সাঃ)-কে নিজের ব্যাপারে একটি কথা জানাল। সে বললো, ‘সে কয়েকজনের এতিমের মা।’
রাসূল (সাঃ) তাঁর পানির মশকটি বিসমিল্লাহ বলে স্পর্শ করলেন। তারপর তা থেকে আমাদের পাত্রগুলোতে পানি ঢালতে শুরু করলেন। আমরা চলিশজন পিপাসিত ব্যক্তি তা থেকে পানি পান করে পরিতৃপ্তি হলাম এবং আমাদের সমস্ত পাত্র ভরে নিলাম। তারপর তাঁর মশকটি তাকে ফেরত দিলাম। আমরা এতো পানি নেয়ার পরও তা আগের চেয়ে বেশি পানিতে পূর্ণ ছিল।
এরপর রাসূল (সাঃ) আমাদেরকে বললেন, ‘তোমাদের যার কাছে যে খাবার আছে তা নিয়ে এসো।’ এভাবে রাসূল (সাঃ) মহিলার জন্য কিছু রুটি ও খেজুরের ব্যবস্থা করলেন। এরপর তাকে বললেন, ‘এগুলো তোমার পরিবারের জন্য নিয়ে যাও। আর কোনো, আমরা পান করা সত্ত্বেও কিন্তু তোমার পানি একটুও কমে নি। আল্লাহ তাআলাই আমাদেরকে পানি পান করিয়েছেন।’
মহিলাটি তাঁর উটে চড়ে বসল। সে খাবার পেয়ে খুব খুশী হলো। বাড়ি পৌঁছে সে সবাইকে বলতে লাগল, ‘আমি অনেক বড় একজন যাদুকরের কাছ থেকে এসেছি। তবে তিনি নবীও হতে পারেন, যেমনটি তাঁর সঙ্গীরা বলে থাকে।’
তাঁর কাছে পুরো ঘটনা শুনে তাঁর গোত্রের লোকেরা খুব আশ্চর্য হলো। এ ঘটনার কিছুদিন পরে উক্ত মহিলাসহ গোত্রের সবাই ইসলাম গ্রহণ করলো। (সহীহ বুখারী: ৩৩৬৩ ও সহীহ মুসলিম : ১১০০)
মূলত প্রথম দর্শনেই রাসূল (সাঃ)-এর আচরণ ও অনুগ্রহে মহিলাটি মুগ্ধ হয়েছিল। আরেকদিনের ঘটনা। জনৈক ব্যক্তি রাসূল (সাঃ)-এর কাছে এসে কিছু অর্থ কড়ি চাইল। রাসূল (সাঃ) তাকে দুই পাহাড়ের মধ্যে বিচরণরত একপাল মেষ দান করলেন।
লোকটি তাঁর গোত্রের কাছে ফিরে এসে বলতে লাগল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা সবাই ইসলাম গ্রহণ কর। কেননা, মুহাম্মদ (সাঃ) এমনভাবে দান করেন যে, তাঁর মনে দরিদ্রতা ও অভাবের ভয় নেই।’
আনাস (রাঃ) বলেন, ‘লোকটি কেবল পার্থিব স্বার্থে আল্লাহর রাসূলের কাছে এসেছিল। কিন্তু সে দিন পেরিয়ে ভোরের আলো ফুটে ওঠার আগেই দ্বীন তাঁর কাছে পৃথিবী ও পৃথিবীর সবকিছুর চেয়ে প্রিয় ও সম্মানের বস্তু হয়ে গিয়েছিল।’ (সহীহ মুসলিম : ৪২৭৫)
একটি প্রস্তাব…
প্রথম দর্শনেই দর্শকের মস্তিঙ্কে আপনার ভাবমূর্তির ৭০% গেঁথে যায়। সুতরাং আপনি মানুষের সঙ্গে এমন আচরণ করুন যেন এটিই আপনার প্রথম এবং শেষ সাক্ষাৎ।
উৎসঃ জীবনকে উপভোগ করুন বই থেকে।
এরপর পড়ুন : মানব প্রকৃতি মাটির প্রকৃতির ন্যায়
For more update please follow our Facebook, Twitter, Instagram , Linkedin , Pinterest , Tumblr And Youtube channel.