দাঁত ব্রাশের প্রয়োজনীয়তা ও ব্রাশ করার নিয়ম

দাঁত কেন ব্রাশ করবো?

দাঁত ব্রাশ করার নিয়মএ—প্রশ্নের জবাবে আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করতে হয়—দাঁত কেন ব্রাশ করবো না? কেননা সমস্ত শরীরের মধ্যে দাঁত হচ্ছে অমূল্য সম্পদ। যা অনেক কাজেই লাগে। যেমন শুদ্ধ উচ্চারণের জন্য দাঁতের প্রয়োজন। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যও দাঁতের প্রয়োজন এবং সবশেষে যেটা বেশি প্রয়োজন সেটা হচ্ছে, খাওয়ার জন্য।

সুন্দর করে খেতে হলে সুস্থ দাঁতের বিকল্প নেই। আমাদের দেশে বেশির ভাগ লোকই খাওয়ার জন্য বাঁচে। বাঁচার জন্য খায় না। কাজেই দাঁত না থাকলে যতো মজাদার জিনিসই খাননা কেন, চিবিয়ে না খেলে আমরা সমস্ত মজা থেকে বঞ্চিত হই। মানুষ মাত্রই খাওয়ার প্রতি লোভ আছে। তার উপর আমরাতো বাঙ্গালী। অতএব বুঝতেই পারছেন দাঁত সুস্থ রাখতে হলে দাঁত ব্রাশের কতো প্রয়োজন

দাঁত ব্রাশ করার নিয়ম

প্রশ্ন হচ্ছে—‘কীভাবে দাঁত ব্রাশ করবো?’ আগেকার দিনের লোকেরা ডানে-বামে ব্রাশ চালিয়ে দাঁত ব্রাশ করতো? কিন্তু আসলে তা ঠিক নয় বা নিয়ম নয়। দাঁত ব্রাশের নিয়ম হচ্ছে, নিচের মাড়ির ক্ষেত্রে ব্রাশ মাড়ি থেকে উপরের দিকে এবং উপরের মাড়ির ক্ষেত্রে নিচের মাড়ি দিকে ব্রাশ করতে হবে। চিবিয়ে খাওয়ার সময় যে অংশটুকু ব্যবহৃত হয়, অর্থাৎ চর্বণের দিক, পেছনের দাঁতের ক্ষেত্রে সামনে-পেছনে এবং সামনের দাঁতের ক্ষেত্রে ডানে—বামে ব্রাশ করতে হবে। এ নিয়ম উপর এবং নিচের ক্ষেত্রেও প্রয়োজন।

কি ধরনের টুথপেস্ট ব্যবহার করবেন? 

অনেকেই দন্ত চিকিৎসকদের প্রশ করেন—কি পেস্ট ব্যবহার করবো ? এ প্রশ্নের জবাব দেয়ার পূর্বে আমাদের ভাবতে হবে, পেস্টের উপকারিতা কি? আর পেস্ট ব্যবহার না করলেই বা ক্ষতি কি? শুধু ব্রাশেই কি দাঁত পরিস্কার হয় না? বর্তমানে  বিভিন্ন রকমের পেস্টও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। যা পূর্বে ছিল না। দাঁত ব্রাশ করার উদ্দেশ্যে হচ্ছে, প্রতিটি দাঁত থেকে প্ল্যাগ দূর করে দেয়া। এর জন্য পেস্ট নিলেও হয়, না নিলেও হয়। তারপরও পেস্ট নিতে হয় মুখে সুগন্ধের জন্য, ফেনা হলে একটু ভালো অনুভূতির জন্য এবং আরো একটু ভালো পরিস্কারের জন্য। পেস্ট ব্যবহারে যে ক্ষতি হয়, তা কিন্তু নয়। বরং একটু বাড়তি উপকারই হয়। বিশেষ করে যদি মেডিকেটেড পেস্ট বা পাউডার হয়, যেমন ফ্লোরাইড টুথ পেস্ট। যেসব টুথপেস্ট বা পাউডার ডিস্ক ক্লোরাইড মিশ্রিত থাকে এবং যে টুথপেস্ট বা টুথ পাউডারে দাহ ওঠানোর উপাদান মিশ্রিত থাকে, সেগুলো অবশ্যই দাঁতের উপকারে আসে।

ফ্লোরাইড টুথপেস্ট (Tooth paste) বা পাউডার ব্যবহার করলে দন্তক্ষয় রোগ থেকে অনেকাংশে রেহাই পাওয়া যায়। যাদের দাঁতে শিন বা কন কন করে, তাদের জন্য জিঙ্ক ক্লোরাইড যুক্ত পেস্ট বা পাউডার ভালো কাজ করে। দাঁতের শিরশির কমানোর উপায় জানতে ডা. আঁখি আক্তার আন্নী একটি পরামর্শমূলক লেখা পড়তে পারেন। লেখাটি মানবজমিন অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। 

পড়ুন >> দাঁত শিরশির করে, যা করতে হবে

দাঁতের দাগ দূর করার উপায়!

যাদের দাঁতে কালো দাগ বেশি থাকে, বিশেষ করে যারা পান এবং সিগারেট খান, তাদের জন্য স্টেইন রিমোভারযুক্ত পেস্ট বা পাউডার খুবই উপকারী। সুস্থ দাঁতের জন্য কেবল ব্রাশ করাটাই যথেষ্ট নয়। কারণ যাদের দাঁতের ফাঁকে-ফাঁকে আঁশালো জাতীয় যেমন মাংস ও কিছু কিছু তরকারী জমে থাকে, সেগুলো ব্রাশে যায় না। এক্ষেত্রে খিলাল ব্যবহার   করতে হবে। যাদের দাঁতের মাঝখানে ফাঁকা খুবই কম, সেক্ষেত্রে খিলাল ঢোকার জায়গায় সুতা ঢুকিয়া পরিস্কার করতে হবে।

উপরক্ত লিখিত নিয়মাবলী পালন করলে সারাজীবন ভরে সুস্থ দাঁতের অধিকারী হওয়া যায়। তাই বলে কিন্তু ৬ মাস অন্তর-অন্তর দন্ত চিকিৎসককে দাঁত দেখাতে ভুলবেন না। কেননা তিনিই একমাত্র বলতে পারবেন, আপনার দাঁতগুলো সুস্থ না অসুস্থ। এখন নিশ্চয়ই বোঝা গেল, দাঁত ব্রাশের প্রয়োজনীয়তা কি? 

লেখকঃ চৌধুরী দীন ইসলাম

For more update please follow our Facebook, Twitter, Instagram , Linkedin , Pinterest , Tumblr And Youtube channel.

Leave a Comment