জেলে ও দৈত্য এটি আরব্য রজনীর সেরা গল্পগুলির একটি। শিশুরা এজাতীয় গল্প পড়তে, শুনতে ও দেখতে ভালোবাসে। আপনার ছোট সোনামণিকেও আলিফ লায়লার এই গল্পটি পড়ে শুনাতে পারেন যা তাকে খুবই আনন্দ দিবে।
গল্প : জেলে ও দৈত্য ( শিশুদের সেরা আরব্য রজনীর গল্প ২)
এক দেশে বাস করত এক জেলে। তার বাড়ি ছিল এক নদীর ধারে । বউ ছেলেমেয়ে নিয়ে কোনওরকমে কেটে যেত তার দিন। তার নিয়ম ছিল—দিনে পাঁচবারের বেশি জাল ফেলত না ।
একদিন..
দুপুরবেলা সে গেছে জাল ফেলে মাছ ধরতে। প্রথমবার খুব ভারি কী যেন একটা আটকে গেল জালে । জেলে ভাবল না-জানি কত বড় মাছ উঠেছে।
কিন্তু জালটা তুলতেই জেলে অবাক! বড়সড় একটা গাছের গুঁড়ি আটকে আছে জালে : দ্বিতীয়বার জাল ফেলল জেলেটা । এবারও ভাগ্য খারাপ। এবার উঠেছে একটা মরা গাধা! মনটা খারাপ হয়ে গেল জেলের তৃতীয়বার উঠল একটা কাদা-ভর্তি মাটির কলস। এবার জেলের মনে হল আল্লাহ বােধ হয় তাকে স্ত্রী-পুত্রহ না খাইয়ে মরতে চান। চতুর্থবার জালে উঠল কয়েকটা ভাঙা বাসন-কোসন : মনের দুঃখে হতাশ হয়ে জেলে শেষবারের মতাে জাল ফেলল।
এবার উঠল একটা বেশ বড় আকারের তামার কলস। তুলতে খুব কষ্ট হচ্ছিল জেলের ; ভীষণ ভারি তার কলসটা! টেনেটুনে পাড়ে এনে তুলল কোনওরকমে । জেলে ভাবল মাছ না পেলেও এই কলস বেচে কিছু টাকা পাওয়া যাবে। এমনকি সে রােজ যে পরিমাণ মাছ ধরে কলসটার দাম তারচেয়ে বেশিও হয়ে যেতে পারে।
কলসটকে উল্টে-পাল্টে দেখল জেলে। কলসের মুখ খুব শক্তভাবে আটকানাে । ঢাকনার মধ্যে একটা সিলমােহর । তাতে সুলেমান বাদশাহর নাম খােদাই করা । জেলে ভাবল কলসের ভেতর অনেক মােহর বা সােনাদানা থাকতে পারে । তাই অনেক কষ্টে খুলে ফেলল ঢাকনাটা।
সঙ্গে সঙ্গে ঘটল এক অবাক কাণ্ড!
কলসের মুখ দিয়ে বেরিয়ে এল ধোঁয়ার কুণ্ডলি । সেই ধোঁয়া বেরুতে বেরুতে আকাশ প্রায় ঢেকে ফেলার অবস্থা! কিছুক্ষণ যেতেই সেই ধােয়ার কুণ্ডলিটা পাক খেতে খেতে রূপ নিল এক বিশাল দৈত্যের । জেলে তাে কাঁপতে লাগল ভয়ে! ভয় হবে না কেন! দৈত্যটার দুই চোখ থেকে যেন আগুন বেরুচ্ছে । গোঁফ দুটো ইয়া মােটা আর পাকানাে। দাঁতগুলাে যেন বিরাট পাথরের টুকরাে । হাতদুটো যা বিরাট! জেলেকে ধরে যদি ছুড়ে মারে তাহলে ছােট্ট একটা ঢিলের মতাে কতদূরে গিয়ে যে পড়বে তার ঠিক নেই।
জেলেকে দেখে বলে উঠল ভয়ঙ্কর দৈত্যটা,
‘আমাকে এবার ছেড়ে দাও সুলেমান পয়গম্বর । আমি আর কখনও তােমার অবাধ্য হব না । তােমার অবাধ্য হয়েছিলাম বলে আল্লাহর নির্দেশে তুমি আমাকে এই কঠিন শাস্তি দিয়েছিলে । আর কখনও তােমার অবাধ্য হব না! দয়া করে এবারের মতাে মাফ করে দাও।’
‘আমি তাে সুলেমান পয়গম্বর নই দৈত্যসম্রাট । আমি এক সামান্য জেলে। কাঁপতে কাঁপতে সত্যি কথাটাই বলল জেলে ।
‘তাহলে তাে ভালােই হল । তােমাকে আমার হাতে মরতে হবে । যেন মহা খুশি হয়ে উঠল দৈত্যটা। আর জেলের অবস্থা যে কী হল তা তাে বােঝাই যাচ্ছে । তবু সাহস হারল না জেলেটা । বিপদে সাহস হারাতে নেই : সাহস থাকলে বাঁচার অনেক উপায় আসতে পারে মনে। সাহস করে দৈত্যকে জিজ্ঞাসা করল জেলে, আমি তােমাকে মুক্তি দিয়েছি । আর তুমি আমাকে মেরে ফেলতে চাও! আমি তে, উপকার করেছি তােমার । উপকারীকে কি খুন করা উচিত কারও?
তখন দৈত্যটা তার নিজের জীবনের গল্প বলতে শুরু করল। ‘আমি ছিলাম সুলেমান পয়গম্বরের হুকুমের দাস । আমার অনেক শক্তি । কীভাবে যেন আমার মাথায় দুষ্টবুদ্ধি এল একদিন । আমি সুলেমান পয়গম্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসলাম । কিন্তু তিনি তো আল্লাহর নবী । সত্যের শক্তি আছে তাঁর । খুব সহজেই পরাজিত হলাম আমি। আমাকে ধরে এই কলসের মধ্যে পুরে ফেললেন তিনি। তারপর খুব শক্ত করে মুখটা এঁটে নদীতে ফেলে দিলেন। তারপর কত বছর কেটে গেল। আমি এই কলসেই বন্দি হয়ে রইলাম। কী যে কষ্ট হয়েছে আমার! প্রথম একশো বছর শুধু ভাবতাম যদি কেউ আমাকে মুক্ত করে দেয় তাহলে তাকে অনেক ধনী বানিয়ে দেব ! পৃথিবীর সেরা ধনী হবে সে । কিন্তু কই? একশাে বছরের মধ্যে কেউ তাে মুক্ত করল না আমাকে। তারপর ভাবলা, এবার যদি কেউ মুক্ত করে আমাকে তাহলে তাকে অনেক হিরে-জহরৎ ও মুক্তো-মানিক দেব। এভাবে কেটে গেল আরও একশাে বছর ! কিন্তু কই? কেউ তাে এল না আমাকে এই কলস থেকে মুক্ত করতে? তারপর আমি শপথ করলাম, এবার যদি কেউ আমাকে মুক্ত করে তাহলে তাকে মেরে ফেলব । সেজন্য তােমাকে মরতে হবে এখন।
জেলে দেখল, এ তাে ভারি বিপদ! এই মােটাবুদ্ধির দৈত্য তাে তাকে সত্যি সত্যি মেরে ফেলবে! অনেক বােঝাতে চেষ্টা করল দৈত্যটাকে তাকে যেন হত্যা না করে । কিন্তু দৈত্যটা নাছোড়বান্দা। মেরে তাকে ফেলবেই । মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও বুদ্ধি আর সাহস হারল না জেলে। এ-কথা সে-কথা বলে কিছুক্ষণ সময়। নষ্ট করল হঠাৎ জেলের মাথায় বুদ্ধি এল একটা ।
‘আচ্ছা তুমি তাে বিরাট দৈত্য। তুমি এই কলসটার মধ্যে কীভাবে থেকেছ? আমার তাে মনে হয় এই কলসে তােমার একটা ঠ্যাঙও ঢুকবে না। এত বড় দেহ নিয়ে এর মধ্যে ঢােকা সম্ভবই না : নিশ্চয়ই গুল মেরেছ তুমি।’
খেপে গেল দৈত্যটা।
কী, এত বড় অপবাদ! আমি মিথ্যেবাদী? দেখ তাহলে। আবার এর মধ্যে ঢুকে দেখাচ্ছি তােমাকে ঢুকতে পারি কি-না।
জেলেও তা-ই চাইছিল ।
সঙ্গে সঙ্গে দৈত্যটা এতটুকু হয়ে সুড়সুড় করে ঢুকে পড়ল । যেই- দৈত্যটা পুরােপুরি কলসের মধ্যে ঢুকেছে অমনি জেলে ঢাকনা বন্ধ করে দিল কলসের । ঢাকনা বন্ধ হবার পর ব্যাপার বুঝতে পারল দৈত্য। আর শুরু হল তার দাপাদাপি কিন্তু সুলেমান পয়গম্বারের সিলমোহর আঁকা ঢাকনা । এটা খােলা তাে আর তার পক্ষে সম্ভব নয়!
দৈত্যের দাপাদাপি চলতে লাগল । জেলের কাছে মিনতি করতে লাগল সে, ‘আমাকে মুক্ত করে দাও। দয়া করে আমাকে ছেড়ে দাও। তুমি আমার উপকার করেছ । তােমার কি আমি ক্ষতি করতে পারি? দয়া করে ছেড়ে দাও আমাকে।
এবার আর জেলের মন গলছে না তার কথায় ।। আর তােমাকে ছাড়ছি না । তােমার এই কলসের মধ্যে বন্দি থাকাই ভালাে। আমি আবার তােমাকে নদীতে ফেলে দিচ্ছি ।
‘দোহাই তােমায় । এবারের মতো মাফ করে দাও জেলে ভাই।’ আর ভুল হবে না ।
তোমাকে কিছুতেই আর মুক্ত করব না। বাদশাহ উনান আর হেকিম রাতের গল্পটা জানা আছে আমার। একবার ছেড়ে দিয়ে যে বিপদে পড়েছি আর সে ভুল কিছুতেই হবে না। উফ ভুলে গিয়েছিলাম গল্পটার কথা।
‘বাদশাহ উনান আর হেকিম রায়ানের গল্প আমি তাে কখনও শুনিনি!’
‘শােনাে তাহলে’
জেলে শুরু করল সেই গল্প।
অনেককাল আগে রুম দেশে রাজত্ব করতেন উনান । তাঁর ছিল কুষ্ঠ রােগ। দেশ-বিদেশের কোনও চিকিৎসক-হেকিমই তার কষ্ট সারাতে পারল না। বাদশাহ উনানের খুব মন খারাপ। তখন এক বুড়াে হেকিম এল তার দরবারে : জানাল বাদশহর দুরারােগ্য কষ্ট রােগ সারিয়ে তুলতে পারবে সে। নাম তার রায়ান।
দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললেন বাদশাহ। মনে তার আর কোনও আশা নেই তবু বললেন, দেখো চেষ্টা করে, কেউ তাে পারল না এই রোগ সারাতে। যদি সারাতে পার আমার এ রােগ তাহলে তােমাকে এত ধন-দওলত দেব যে তােমার নাতি-নাতনিরাও সুখে থাকতে পারবে ।
হেকিমরা ছিলেন জ্ঞানী মানুষ । বাদশাহর কথা শুনে তেমন কিছু বললেন না তিনি। কাজ শেষ না করে কোনও ভালো মানুষ বড়াই করে না। হেকিম রায়ান ছিলেন তেমন একজন ভালােমানুষ । চুপচাপ ঘরে এলেন, বইপত্র ঘেটে নানান দেশের গাছ-গাছড়া নিয়ে গবেষণা করলেন তারপর ওষুধ বানালেন হেকিম, রায়ান ! ভারি আশ্চর্য সে ওষুধ। একটা ফাঁপা লাঠির মধ্যে সেই ওষুধের গুড়ো ভরলেন তিনি।
পরদিন এই লাঠি আর বল নিয়ে গেলেন বাদশাহর কাছে। বাদশাকে বললেন এই লাঠি দিয়ে রোজ বল খেতে। তাহলেই বাদশার কুষ্ঠ চলে যাবে।
সভাসদরা হেকিম রায়ানের এই চিকিৎসার কথা শুনে একজন আর একজনের চোখ চাওয়া-চাওয়ি করল । তারা পাত্তাই দিল না হেকিমের কথাকে ।
কিন্তু বাদশাহ ভাবলেন দেখাই যাক-না চেষ্টা করে যদি এতে রােগ ভালো হয়ে যায়! হেকিমের কথামতাে বাদশাহ রোজ লাঠি দিয়ে বল খেলতে লাগলেন । কুষ্ঠও ভালো হয়ে এল বাদশাহর। একদিন বাদশাহ দেখলেন কুণ্ঠ সম্পূর্ণ ভালাে হয়ে গেছে তার ।
কতজ্ঞতায় ভরে উঠল বাদশাহ উনানের মন। হেকিম রায়ানকে ধন-দওলত, সােনা-দানা, মণি-মাকি দিয়ে মহা ধন বানিয়ে ফেললেন। হেকিম হলে বাদশাহর প্রাণপ্রিয় বন্ধু ।।
কিন্তু এতে অন্য সভাসদদের মনে অশান্তি সৃষ্টি হল । তারা সবাই এত বছর ধরে বাদশাহর সেবা করে চলছে : কিন্তু তাদের কোনও কদর নেই। আর কি-ন এই নতুন হেকিমের এত আদর! হিংসেয় জ্বলেপুড়ে মরতে লাগল তারা । এমনই হয় ! অযোগ্য মানুষেরা চিরকাল এভাবে যোগা মানুষদের হিংসে করে । ক্ষতি করতে চায় তাদের। কিন্তু যােগ্য মানুষেরা হিংসুটেদের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে কোনাে খোঁজও রাখে না হেকিম রায়ানও রাখেনি।
এদিকে সভাসদরা রােজ বাদশাহর কানে মিথ্যে কথার বিষ ঢালতেই থাকল । তারা বলল, হেমি রায়ান নাকি জাদুকর । তিনি নাকি জাদু করে বাদশাহর কুষ্ঠ ভালাে করে দিয়ে বাদশাহর বন্ধু হবার ভান করছেন। আসলে নাকি তিনি বাদশাহকে হত্যা করার ফন্দি এঁটেছেন । বাদশাহ প্রথমে বিশ্বাস করেননি। কিন্তু সব সভাসদ মিলে এমনই ষড়যন্ত্র করল যে শেষ পর্যন্ত তিনি বিশ্বাসই করে বসলেন : হুকুম হল বাদশাহকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রের অপরাধে হেকিমের মৃত্যদণ্ড হবে । হেকিম রায়ান অবাক হলেন রাজার আচরণ দেখে । তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না প্রথমে। মানুষ যে এমন অকৃতজ্ঞ হতে পারে তা তার কল্পনাতেও আসেনি।
মৃত্যুদণ্ড দেয়ার আগে বাদশাহর কাছে কিছু সময় চাইলেন রায়ান | বললেন, তাঁর বাড়ির জিনিশপত্র গােছগাছের জন্য যেন সময় দেয়া হয় কিছুটা। তার কাছে একটা হেকিমি বই আছে । ওটা হাতের কাছে রাখলে যে কোনও রােগ থেকে বাদশাহ নিজেই চিকিৎসা করে রােগমুক্ত হতে পারবেন । বাদশাহ সময় দিলেন হেকিম রায়ানকে । বইটা পেতে চাইলেন তিনি।
হেকিম রায়ান বেশ কিছুক্ষণ পর ফিরে এলেন প্রাসাদে । সৈন্যরা পাহারা দিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে গেল; আবার ফিরিয়ে আনল । হেকিম ফিরে আসতেই বাদশাহ বইটা পেতে চাইলেন। হেকিমের হাতে একটা বড় থালা আর একটা ছােট্ট বােতলে কিসের যেন খানিকটা গুঁড়াে ভর্তি রয়েছে । হেকিম বােতল থেকে গুঁড়াে বের করে থালায় ছড়িয়ে দিলেন,
‘মহামান্য বাদশাহ আমার কাটা মুণ্ডুটা এই থালার উপর রাখলে আমার মুণ্ড থেকে রক্তপড়া বন্ধ হবে । বইটা হাতে নিয়ে পাতা ওল্টাতে থাকবেন । তখন দেখবেন আমার কাটা মুণ্ডও কথা বলে উঠবে । কিন্তু মহামান্য বাদশাহ, আমাকে হত্যা করার আগে কিছুতেই আপনি বইয়ের পাতা ওল্টাবেন না ।
কিন্তু বাদশাহর তর সইল না যেন। সঙ্গে সঙ্গে পাতা ওল্টাতে গেলেন। পাতার সঙ্গে পাতা জড়িয়ে আছে । পাতা ওল্টার জন্য জিভে আঙুল লাগিয়ে আঙুলটা ভিজিয়ে নিলেন : একটার পর একটা পাতা ওল্টালেন। দেখলেন সবগুলো পাতাই সাদা। একইভাবে জিভে আঙুল ভিজিয়ে আরও কটা পাতা ওল্টালেন বাদশাহ । কিন্তু একই অবস্থা। জিজ্ঞাসা করলেন রায়ানকে,
‘কই, লেখা কই? সব পৃষ্ঠাই তাে সাদা’।
‘পাতা উল্টে যান মহামান্য বাদশাহ, লেখা পেয়ে যাবেন। হেকিম রায়ানের উত্তর।
খানিকক্ষণ পর কেমন যেন করে উঠল বাদশাহর শরীর। মাথাটাও দুলে উঠল যেন। মোচড় নিয়ে উঠল পেটের ভেতরটা । হঠাৎ বাদশাহ চেঁচিয়ে উঠলেন, বিষ! বিষ! বইয়ের পাতায় বিষ মাখানাে আছে..!!!’ বলেই ঢলে পভুলেন তিনি ।
এবার জেলে কলসবন্দি দৈত্যকে বলল, ‘কী দৈত্যসম্রাট! এই গল্পটা থেকে শিক্ষা নিতে পেরেছ তে কিছু? উপকারীকে আল্লাহ কীভাবে রক্ষা করেন আর নির্দোষকে কীভাবে বাঁচিয়ে দেন দেখলে তাে ? তােমার উপকার করেছিলাম বলে আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলে। এখন তােমাকে নদীতে ফেলে দিয়ে ঘরে ফিরে যাব । এভাবেই আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে দিলেন।
এবার দৈত্যটা কলসের ভেতর থেকে আমাকে ছেড়ে দাও‘ বলে কান্নাকাটি করতে লাগল । এমনভাবে মিনতি করতে লাগল যে দয়া হল জেলের । কলসের মুখটা খুলে দিল সে। অমনি কলস থেকে বেরিয়ে এল দৈত্যটা ! হেসে উঠল ভীষণ জোরে।
জেলে ভাবল আর তার বাঁচার উপায় নেই । দৈত্যটাকে আবারও বিশ্বাস করা উচিত হয়নি । মনে মনে দৈত্যের হাতে মরার জন্য প্রস্তুত হল জেলে ! কিন্তু দৈত্য: ভারি গলায় বলে উঠল,
‘এস আমার সঙ্গে।’ বলেই লম্বা লম্বা পা ফেলে এগিয়ে চলল দৈত্যটা। জেলেকে নিয়ে সে হাজির হল পাহাড়ের কাছে একটা উপত্যকায় : তার মাঝখানে টলটলে স্বচ্ছ পানির একটা হ্রদ : দৈত্য বলল,
: জাল ফেল।
: জেলে জাল ফেলল।
চারটি মাছ উঠল চার রঙের । দৈত্য বলল, ‘রােজ এখানে এসে একবার জাল ফেলবে। এরকম চারটি মাছ উঠবে রােজ। সেগুলাে বিক্রি করে সুখে-শান্তিতে দিন কাটবে তােমার। আমি চললাম। এই বলে এক লাফে শূন্যে উঠে কোথায় যেন মিলিয়ে গেল দৈত্যটা । সব দুঃখ-কষ্ট দূর হয়ে গেল জেলের।
আরও পড়ুন : আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ
গল্পের উৎস : ছোটদের আরব্য রজনীর সেরা গল্প।
লেখক : আহমাদ মাযহার।
For more update please follow our Facebook, Twitter, Instagram , Linkedin , Pinterest , Tumblr And Youtube channel.