নবী ইব্রাহীম (আ.) যখন শিশু, তখন সবাইকে দেখতেন মূর্তি পূজা করতে। এ ব্যাপারে তাঁর প্রচন্ড আপত্তি ছিল। ইব্রাহীম (আ.) বলতেন – মানুষ কেন মাটির গড়া মূর্তির পূজা করবে? একমাত্র আল্লাহর সামনেই তাকে মাথা নত করতে হবে। তার এই বিপ্লবী চেতনা বাদশাহ নমরুদের কানে যেতে সময় লাগেনি।
একটু বড় হবার পরে একদিন ইব্রাহীম (আ.) নমরুদের পূজাখানার মূর্তিগুলো ভেঙ্গে কুড়ালটি সবচেয়ে বড় মূর্তিটির কাঁধে ঝুলিয়ে রাখলেন। ইব্রাহীম (আ.) কে রাজ দরবারে ধরে নিয়ে আসা হলো। নমরুদ তাঁর কাছে জানতে চান, তিনি কি মূর্তিগুলো ভেঙ্গেছেন কিনা?
ইব্রাহীম (আ.) বললেন, যে মূর্তিটার কাঁধে কুড়াল ঝুলানো আছে তার কাছে জিজ্ঞেস করো, কে মূর্তিগুলোকে ভেঙ্গেছে?
মূর্তি কি কথা বলতে পারে? রাগত স্বরে বললো নমরুদ।
ইব্রাহিম (আ.) তখন বললেন, যে দেবতা কথা বলতে পারে না, নিজেকে রক্ষা করতে পারেনা, সে তোমাদের প্রভু হয় কিভাবে?
এ কথায় নমরুদ রাগে উত্তেজিত হয়ে ঠিক করল ইব্রাহীম (আ.) আগুনে পুড়িয়ে মারার। তৈরি হলো অগ্নিকুন্ড। সেই অগ্নিকুণ্ডের চারিদিকে জড়ো হলো উৎসুক জনতা। সবার চোখেই নিশ্চিত আতঙ্ক।
এ সময়ে জিব্রাইল ফিরিস্তা এসে ইব্রাহীম (আ.)কে বলতে লাগলো- আগুন থেকে আপনাকে বাঁচাতে আমি সাহায্য করতে এসেছি।
ইব্রাহীম (আ.) তার জবাবে বললেন ‘আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। যে আল্লাহর একত্ববাদের তালাশের জন্য আজ আমাকে আগুনে ফেলা হচ্ছে, সেই আল্লাহই সবকিছু দেখছেন। আল্লাহ চাইলে তিনিই আমাকে রক্ষা করতে পারেন। আমাকে আগুনে জ্বালিয়ে মেরে ফেললে আল্লাহ যদি রাজি থাকেন তাতেই আমি রাজি।’
নমরুদের নির্দেশে যথাসময়ে ইব্রাহীম (আ.)কে আগুনের মাঝখানে ফেলে দেয়া হলো। কিন্তু একী! সবাই তাকিয়ে দেখছে ইব্রাহীম (আ.) তো পুড়ছে না! যে আগুন সবকিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়, তিনি সেই লেলিহান শিখার ভেতরে বসে হাসছেন তিনি।
এটাই আল্লাহর সার্বভৌমত্ব। ইব্রাহীম (আ.)’র এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আল্লাহ দেখালেন তার মহাশক্তির একটুখানি ঝলক ।
লেখকঃ তৌফিক মিথুন।
আরও জানুনঃ কুরআনে বর্ণিত নবীদের নাম বাংলা অর্থসহ!
প্রিয় পাঠক পাঠিকা, আশা করি নবী ইব্রাহীম আ. কাহিনীটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে এবং এটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। আরও জানতে ইসলামিক গল্প কাহিনী তে আসুন।
Please follow our Facebook, Twitter, Instagram, Linkedin, Pinterest, Tumblr, And Youtube channels for more updates.