ন্যায়পরায়ণতার অনুপম দৃষ্টান্ত। (কিশোর গল্প)
আলী রাযি.-এর খেলাফতকালে বায়তুল মালে মতির একটি হার জমা হয়।
আলী রাযি.-এর মেয়ে যায়নাব রাযি. এ সম্পর্কে অবগত হয়ে ঈদের একদিন পূর্বে বায়তুল মালের দায়িত্বে নিয়োজিত ইবনে আবু রাফে রাযি.-কে বললেন, আগামীকাল ঈদ। মেয়েরা নতুন নতুন পোশাক ও অলঙ্কার পরিধান করবে।
আমার কোনো গহনা নাই। এতএব বায়তুল মালে যে মতির হারটি জমা আছে সেটি আমাকে ধার দিন। ঈদের কয়েকদিন পর আপনাকে তা ফেরত দিয়ে দেব।
ইবনে আবু রাফে রাযি. বললেন, আমি মাত্র তিনদিনের জন্য তোমাকে এ হার ধার দিতে পারি।
এ প্রস্তাবে যায়নাব রাযি. সম্মত হলেন এবং তিনদিনের জন্য হারটি ধার দিলেন।
ঈদের দিন হার পরিধান করলে আলী রাযি. মেয়েকে বললেন, এটি তুমি কোথায় পেয়েছ মা!?
যায়নাব রাযি. ঘটনা খুলে বললেন।
তৎক্ষণাৎ আলী রাযি. ইবনে আবু রাফে রাযি.-কে ডেকে পাঠালেন।
তিনি উপস্থিত হলে খলীফা তাকে বললেন,
তুমি আমার অনুমতি ছাড়া বায়তুল মালের মতির হার আমার মেয়েকে কেন দিয়েছ?
তিনি বললেন, আপনার মেয়ে মাত্র তিনদিনের জন্য হারটি ধার নিয়েছে, তাই দিয়েছি। না হয় কখনো দিতাম না।
খলীফা বললেন, তুমি ভুল করেছ। দ্রুত হারটি বায়তুল মালে জমা করো। আমি আমার মেয়ের উপর প্রচণ্ড ক্ষুদ্র। যদি সে তিনদিনের জন্য ধার না নিত, তাহলে চুরির অপরাধে তাকে গ্রেফতার করে কঠিন শাস্তি দিতাম।
ইবন আবুরাফে রাযি.-যায়নাবের কাছে হার ফেরত চাইলেন।
যায়নাব রাযি. খলীফার কাছে এসে শুধু ঈদের দিনের জন্য তা ব্যবহারের অনুমতি চাইলেন।
খলীফা বললেন, বেটি! তুমি কি নিজে ন্যায়-নীতিকে গলাটিপে হত্যা করতে চাও?
এরপর যায়নাব রাযি. উক্ত হারটি ইবনে আবু রাফে রাযি.-কে ফিরিয়ে দিলেন।
বন্ধুরা! দেখলে তো ন্যায়পরায়ণতা কাকে বলে? [আইয়ামে খিলাফতে রাশেদা, পৃষ্ঠাঃ ৮৯-৯০]
আপনি পড়ছেনঃ আদর্শ কিশোর কিশোরী ৩ বই থেকে।