কেনো রূপ চর্চা করার প্রয়োজন, আপনার রূপ ও সৌন্দর্য ও তারুণ্য ধরে রাখতে কি করবেন, মানুষের সাথে আপনার আচার ও ব্যবহার কেমন হওয়া উচিৎ তা শিখতে, বুঝতে ও অনুশীলন করতে স্মার্টনেসের ৬ষ্ঠ ধাপটি পড়ুন।
কেন রূপ চর্চা প্রয়োজন!
আরও পড়ুন: খুশকি মুক্ত চুলের জন্য
রূপ চর্চা চুল পরিচর্যা পোশাকের ধরন ও মডেল, ঋতুর উপর নির্ভর করে করার নিয়ম। কারণ রূপচর্চার এক এক ঋতুতে এক এক নিয়ম কলা কৌশল রয়েছে। আবার ঋতুর উপর নির্ভর করে প্রসাধনীর ধরণও পরিবর্তন হয়। শীতে যে স্টাইল পোশাক পরেন গরমে পরেন না, আবার বর্ষার পোশাকের ধরণ সে রকম হয়। রূপ চর্চার বেলায়ও তাই। মনে রাখতে হবে রূপ ও স্বাস্থ্য আমাদের সৌন্দর্যের প্রতীক। যা একটু অবহেলায় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই বলি প্রতিকারের আগেই প্রতিরোধ করুন। কেমন করে এই তারুন্য ধরে রাখবেন প্রথমে আমরা জানতে পারি না। এজন্য রূপ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ীই চলা উচিত। প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করেন, পোশাকের যত্ন নিন। কিন্তু রূপের যত্ন নিলেন না, তাহলে এক সময় দেখবেন বড় ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তাই আগে থেকেই সচেতন হন।
আরও পড়ুন : তারুণ্যকে চিরকাল ধরে রাখার কৌশল
আচার ব্যবহার
আপনার রূপ অপরূপ করতে হলে শুধু ভালোবাসা কদর বা প্রসাধন ব্যবহার করলেই চলবে না, আপনার সৌন্দর্য প্রকাশের জন্য চাই, ব্যক্তিত্বের স্বকীয়তা মনের প্রফুল্লতা। মনে করুণ; আপনি একজন সুন্দরী নারী জামা কাপড় পড়েন, নানাবিধ অলংকার সজ্জ্বিত হন, ভাল সাজগোজ করেন, কিন্তু বিমর্ষ বা বিরক্ত মুখে বা ক্রধ চোখে তাকিয়ে থাকেন এমন অবস্থায় আপনি কারোমন জয় করতে পারবেন না।
পক্ষান্তরে আপনি যদি পরিচ্ছন্ন পোশাকে, মুখে মধুর হাসি, বিনয়ভাবে সবার সাথে হেসে কথা বলেন তাহলে আপনাকে অনেক সুন্দর দেখাবে। এবং সবার অবচেতন মনে আপনি সকলের প্রশংসার পাত্র হয়ে উঠবেন। এর জন্য চাই শিষ্টাচার, ভদ্রতা, বিনয়, সহানভুতি, মধুর ব্যবহার ও নম্রতা। বড়দের শ্রদ্ধা ছোটদের স্নেহ করতে শিখুন। সালাম শুভেচ্ছা বিনিময় করা ও কটু নিন্দা বাক্য পরিহার করুন। বদ অভ্যাস ত্যাগ করে ভালো অভ্যাস গড়ে তুলুন।
সহনশীল হউন।
মানব জীবনে সমস্যার অন্ত নেই। অনেক সময় অনেক কাজ একার পক্ষে সমাধান করা সহজ হয় না। ফলে শিকার হতে হয় নানা দুঃখ কষ্টের। মানুষের সাথে আপনার ব্যবহারের সফলতা নির্ভর করবে নিম্নের দুটি বিষয়ের উপর।
(১) অন্যের সমস্যাকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করা এবং অন্য লোকের দৃষ্টিকোন থেকে সমস্যাটিকে দেখা।
(২) সমস্যা জর্জরিত লোকটির সমস্যার প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া। আপনি যদি আপনার বন্ধু-বান্ধব কিংবা আপনজনের সমস্যার প্রতি গুরুত্ব না দেন, কিংবা দেখেও দেখেন না। কিংবা উদাসীন থাকেন, তা হলে ব্যক্তি আপনাকে শুধু এড়িয়েই চলবে না বরং আপনার প্রতি রাগ করে থাকবে। এবং তার সুবিধা মতো সময়ে প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করতে পারে। মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজেই তার বসবাস; সমাজকে নিয়ে তার জীবন চক্র। সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। এই মানসিকতা নিয়ে যদি বাস্তব জীবনে চলি, একজনের প্রয়োজনে আপদে বিপদে সুখে দুঃখে সহানুভূতিশীলও সহনশীল হই। যদি সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করি, তবেই আমাদের জীবিকা শান্তি সুখের হবে।
আমরা যদি সবাই ব্যথিতের বেদনায় সমবেদনা জানাই। ব্যথিত হই ব্যথিতের সাথে একাত্মতা হয়ে একাত্মতা ঘোষণা করে সাহায্য সহযোগিতার হাত প্রসারিত করি। তবে দেখবে চার পাশে কত আপনজন।
প্রয়োজনীয় মুহূর্তে তারা সাহায্য সহযোগিতা ইস্ত প্রসারিত করে সর্বস্ত নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে। এগিয়ে আসবে। বিপদ থেকে উত্তোরণ আপনার জন্য অত্যন্ত সহজ হবে। আপনি আনন্দ তৃপ্তি লাভ করে সুখ ও আনন্দিত হবেন যেটা আপনার স্মার্টনেস বিকাশের ক্ষেত্রে জরুরী বিষয়।
আপনার কাজটি আনন্দের সাথে করুণ।
যে কাজে আপনার স্বপ্ন বা আনন্দ, যে কাজ আপনার ভালো লাগে, যার মাধ্যমে আপনার বিকাশ, আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য সে কাজটিকে আনন্দের সাথে, তৃপ্তির সাথে মন দিয়ে করুণ। দেখবেন আলসেমী ও উদাসীনতা চলে গেছে। সফলতা অর্জন করতে হলে সে কাজটিকে মনে প্রাণে আন্তরিকতার সাথে অবশ্যই সম্পন্ন করতে হবে। আর সে কাজ যদি নিরানন্দ থাকে তবে সে কাজে সফলতা আসে না। তাই যখন যেটা করবেন আনন্দ ও খুশী মনে করুন দেখবেন ভাল ফল পেয়ে গেছেন। পৃথিবীর নিরানন্দ যেটা সৃষ্টি হয়েছে, সেটার মধ্যে ছিল হতাশা। তা হলে কেন হতাশা, এই হতাশাই মানুষের স্মার্টনেস ও আকর্ষণীয়তা কুড়ে কুড়ে খায়। তাই যে কোন মহৎ ভাল কাজ ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আনন্দের সাথে করে সফল হয়ে তার ফল লাভ করুন এবং পরিতৃপ্তি হোন।
বখাটে এড়াতে কৌশল
স্মার্ট মেয়েরা বখাটে ছেলেদের ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখে না। বরং এরা সাহসী কথার সঙ্গে ভিন্ন কৌশলে তাদের শ্যানদৃষ্টির হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখে।
মনে রাখবেন জীবনটা একটি সংগ্রাম ক্ষেত্র, এই সংগ্রাম ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে, ভেঙ্গে না পরে, অভিমান না করে পুনরায় সফলতার জন্য কাজ করে যেতে হবে। নানা প্রতিকূলতাকে জয় করে চলতে হবে।
কেউ আপনাকে কাজে কথা বলছে কেউ আপনাকে টিস করছে, ভয় দেখিয়েছে, পথে দেখা হলেই উত্তাপ্ত করছে, এমন প্রতিকূল অবস্থায় বাস্তবতার ভিত্তিতে সঠিক পদক্ষেপ নেয়ার দরকার।
বিশেষ করে সুন্দরী নারী হলে তো এই সমস্যা অনেক বেশি। পুরুষের শ্যানদৃষ্টিতে পড়ে বিব্রত হতে হয়। ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকার অস্বস্তি থেকে বাঁচতে হলে কৌশলী হতে হবে। আপনার অশ্লীল পোশাক ও অশ্লীল ভাবভঙ্গি পরিহার করতে হবে। কে আপনার দিকে তাকিয়ে আছে কি বলছে সেটা শুনার বা দেখবার দরকার নাই। নিজের কাজের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে দিন।
বিকৃত মেকাআপ করে চেহারাটির ভূগোল পাল্টে ফেলার দরকার নেই। দরকার নেই ভয় পাবার। এক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন,বুদ্ধিমত্ত্বার ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে সঠিক বিষয় বের করে নিয়ে আসুন। না পারলে প্রিয় কোন ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন।
গাপ্পি প্রজাতির স্ত্রী মাছেরা পুরুষ মাছদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে তারা একা চলাফেরা করে না। তাদের সঙ্গি হিসাবে নিজের চেয়ে আকর্ষণীয় দেখায় এমন স্ত্রী মাছ বেঁছে নেয়। প্রয়োজনে সবাই মিলে প্রতিবাদে মেতে ওঠে। তার মানে এই নয় যে এ যন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য এটা কোন বাস্তবভিত্তিক কার্যকর কৌশল। আপনি এই যন্ত্রণা থেকে নতুন উপায়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পেরেছেন এটাই বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ।
প্রয়োজন হল বাহ্যিক বা শারীরিক সৌন্দর্যকে প্রাধান্য না দিয়ে মনের সৌন্দর্য ও গুণাবলী দিয়ে একজন মানুষকে বিচার করা। এটা ছেলেদেরকে বুঝতে হবে।
শেষ কথা হচ্ছে অন্যের দেয়া সিকরিটি বা সুরক্ষা নেয়ার প্রবণতা পরিহার করে নিজেই নিজের সুরক্ষার সাহসিকতা তৈরি করুণ।
লেখকঃ চৌধুরী দিন ইসলাম।
এরপর পড়ুন ৭ম ধাপঃ তারুণ্যকে চিরকাল ধরে রাখার উপায়
For more update please follow our Facebook, Twitter, Instagram , Linkedin , Pinterest , Tumblr And Youtube channel.