তারুণ্য ধরে রাখার উপায় ও ত্বকের যত্ন

আপনার স্মার্টনেস ও আকর্ষণ বজায় রাখতে তারুণ্যকে ধরে রাখতে হবে। কিন্তু আপনার তারুণ্যকে কিভাবে লাইফটাইম ধরে রাখবেন, তারুণ্য ধরে রাখার উপায় ও কৌশল জানতে বুঝতে ও অনুশীলন করতে স্মার্টনেসের ৭ম ধাপটি পড়ুন। লেখক ছেলেদের ও মেয়েদের তারুণ্য ধরে রাখায় উপায় ও ত্বকের যত্ন সুন্দর লেখনির দ্বারা বর্ণনা করেছেন। তাহলে চলুন তারুণ্যকে ধরে রাখতে এটি পড়া শুরু করি…. 

তারুণ্য কে ধরে রাখার উপায়!

তারুণ্য ধরে রাখার উপায়কুড়িতেই  বুড়ি বাঙালি নারীর ক্ষেত্রে এমন একটি প্রবাদ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে কথাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আজকাল পঞ্চাশ বছরের নারীকে দেখলেও মনে হয় ত্রিশই যেন পার হয়নি। কারণ এদের মধ্যে রয়েছে রূপ ও স্বাস্থ্য সচেতনতা। ব্যায়াম করে ডাইড কন্ট্রোল করে রূপচর্চা করে সুন্দর স্লিম দেহ বজায় রাখেন।

তারুণ্যকে ধরে রাখতে অঘোর নিন্দ্রার প্রয়োজন। দেহ মনকে সজীব করে তোলা। অধিক পরিমাণ শাকসবজি ফলমূল, ডিম দুধ আহার করা। অ্যান্টি অক্সিজেন ফলমূল খাবারে তালিকায় রাখা। অধিক পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করা। মনে আনন্দ ফুর্তি আনার জন্য বিনোদনের মাধ্যমে মনকে হাসি খুশি রাখা।

এছাড়া জ্ঞানি সৎ সুন্দর ভালো মনের অধিকারী মানুষের সাথে মিশা। ভাল চিন্তা ভালো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা। দুঃচিন্তা, বিসন্নতা, বদ-অভ্যাস, রাত জাগা, বেশি খাওয়া, পরিচ্ছন্ন না থাকা, পরিহার করুন সদা–সর্বদা তরুন-তরুন রোমান্টিক ভাব ভিতরে জাগরিত করুন। পোশাক পরিচ্ছন্দেও মানানসই হওয়া চাই। মেজাজ মর্জি সদা হাস্যউজ্জ্বল রাখা। সুশৃঙ্খল জীবন যাপন, নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিত্যাগ করা। আপনার দিন ফুড়িয়ে যাচ্ছে, চুল দাড়ি পেকে যাচ্ছে, এসব না ভেবে, দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকার প্রয়াসী হউন।

প্রসাধনী ম্যাকআপ চুলের কার্ট তারুন্যের ছোঁয়া লাগিয়ে দিন। এক্ষেত্রে চুলে ও দাঁড়িতে কলপ বা মেহন্দী লাগিয়ে রূপচর্চার মাধ্যমে চমৎকার লাবন্যময় হয়ে উঠুন। দেহের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য রূপ বিশেষজ্ঞদের কাছে যাওয়া ভ্রমণ করা। স্বাস্থ্য সচেতনতা এভাবেই তারুণ্য কে চিরকাল ধরে রাখা যায়।  

তারুণ্য ধরে রাখতে প্রাকৃতির উপায়ে ত্বকের পরিচর্যা

বর্তমানে মহিলারা খুবই সৌন্দর্য সচেতন । চুল থেকে প্লাস্টিক সার্জারি, মেকআপ থেকে ত্বকের যত্ন পর্যন্ত আমরা অনেকেই অনেক টাকা পয়সা এবং সময় ব্যয় করে থাকি। সৌন্দর্য শুরু হয় সুস্থ সুন্দর বৃদ্ধিতে প্রাকৃতিক উপায়—ত্বকের জন্য খুবই উপকারী হচ্ছে টক দই এবং মধু। মধু এবং টক দই খান এবং মুখে লাগান। এতে ত্বক সতেজ থাকবে।

ধূমপান থেকে বিরত থাকুন, যা কিনা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। প্রচুর পানি পান করুন এবং যা কিছু খান না কেন, খেয়াল রাখবেন তা যেন স্বাস্থ্য সম্মত হয় এবং নিয়মিত ঘুমান। ঘুমানোর আগে মেকআপ তোলার কথা ভুলবেন না। মনে রাখবেন, আপনি যত ক্লান্ত থাকুন না কেন, প্রতি রাতে মুখমন্ডল ভালো করে পরিস্কার করে নিতে হবে।

সুন্দর, নরম ত্বকের প্রধান উপায় হচ্ছে ময়েশ্চারাইজার এবং সানব্লক ব্যবহার করা। চুল এবং ত্বকের জন্য নারিকেল তেল খুবই উপকারী। চুলের গোড়ায় নারিকেল তেল ম্যাসেজ করুন। এতে চুল বেড়ে উঠতে সাহায্য করে।

খুশকি চুলের একটি প্রধান সমস্যা, খুশকি নিয়ন্ত্রণে রাখুন। চুল পড়ে যাওয়া সমস্যা মেয়েদের একটি দুশ্চিন্তার বিষয় । চুল পড়া বিভিন্ন রকম হেয়ার ট্রিটমেন্ট রয়েছে। এ সমস্যা রোধ করার চেষ্টা করুন, অবহেলা করবেন না।

সুস্থ এবং ঝলমলে চুলের জন্য কাস্টার অয়েল খুবই উপকারী। ডিমের সাদা অংশ চুলের জন্য খুব ভালো কন্ডিশনারের কাজ করে। নিষ্প্রাণ চুলের ক্ষেত্রে,হালকা গরম পানিতে অল্প পরিমাণ ভিনেগার মিশিয়ে চুল ধুয়ে নিন।

উজ্জ্বল ত্বকের জন্য

আমাদের শরীরের আচ্ছাদনটির নাম ত্বক। আর সুন্দর—সজীব ত্বকই হল সৌন্দর্যের প্রধানতম আকর্ষণ। তাই ত্বকের পরিচর্যা অত্যন্ত জরুরী। বর্তমানে গৃহিণী হোন বা কর্মজীবী, উভয়ে ব্যস্ত থাকেন ঘরে—বাইরে নানা কাজে।  বাইরের রোদ—বৃষ্টিতে তাদের ত্বক হয়ে উঠে কর্কশ—রক্ষ । সময়াভাবে ত্বক পরিচর্যার সময় পান না। কিন্তু ঈদের আগে ত্বকের যত্নের জন্য একটু সময় বের করে নিন। নইলে ঈদের জন্য কেনা আপনার দামি পোশাক দৃষ্টিনন্দের পরিবর্তে লাগবে দৃষ্টিকটু। স্বল্পসময়ে অল্প খরচ এখুব তাড়াতাড়ি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য রইল কিছু পরামর্শ।

* আন্দাজমতো সাদা জিরা, আতপ চাল সামান্য পানিতে ভিজিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। পরদিন বেটে লেবুর রস ও দুধের সর মিশিয়ে নিন। এ প্যাকটি সারা শরীরে, মুখে—হাতে লাগিয়ে নিন। ১৫—২০ মিনিট পর ভেজা হাতে রগড়ে তুলে ফেলুন। ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিন। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল। যাদের তৈলাক্ত ত্বক তারা সর বাদ দিবেন।

* ঘরে পাতা দই অথবা কাঁচা দুধ, বেসন ও চিনি এক সঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুণ। গোসলের আগে মুখে, হাতে—পায়ে লাগিয়ে ১০—১৫ মিনিট অপেক্ষা করুণ। তারপরে ঘষে তুলে গোসল করে বডিলোশন লাগান।

এখন থেকে রোদে বের হওয়া কমিয়ে দিন। অথবা এড়িয়ে চলুন। ত্বকের পক্ষে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি খুন ক্ষতিকর। যাদের বের হতে হবে তারা সানস্ক্রিন বা সানব্লক মেখে নিবেন। দুপুর ১২ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব সর্বাপেক্ষা ক্ষতিকয়ারক।  এ সময় যত কম রোদে বের হওয়া যায় ততই ভালো।

* একটু ময়দা দুধের সরের সঙ্গে মিশিয়ে মুখে—হাতে লাগাবেন। ১০—১৫ মিনিট পর ঘষে তুলে ফেলবেন। ময়দাগুলো ঝরে যাবে আর ত্বকের উপর সরের তেলা ভাবটা থেকে যাবে। এতে ত্বকের সব ময়লা উঠে যাবে এবং ত্বক উজ্জ্বল    ও মসৃণ হবে। আপনার ত্বক তৈলাক্ত হলে বেসন ও লেবুর রস লাগান।

* মসুর ডাল বাটা ১ টেবিল চামচ,৪-৫ ফোঁটা মধু একটু কাঁচা দুধ মিশিয়ে মুখে—গলা, হাতে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানিতে ধুতে ফেলুন।

* ১ কাপ দুধ, ১ চা চামচ মধু, ১ চা চামচ গাজরের কিংবা কমলালেবুর রস মিশয়ে মাখুন। কিছুক্ষণ পর ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

* গোসল করে গ্লিসারিন ও গোলাপজল মিশিয়ে লাগাবেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এ পদ্ধতি গুলোর যে কোনো একটি নিয়মিত করুণ।

এছাড়া নিয়মিতভাবে ভিটামিন-সি খাবেন। শাক-সবজি, বিভিন্ন ফলের রস বা ফল এবং প্রতিদিন ৬—৮ গ্লাস পানি খাবেন।  

আপনার ত্বক যদি রোওদে পুড়ে যায়, তাহলে ঘরোয়া পদ্ধতি তিনটি ব্যবহার করুণ, উপকার পাবেন।

* একটি ছোট শসা খোসাসহ পাতলা করে কেটে তার সঙ্গে একটা ডিমের কুসুম ও ১ চা চামচ মিল্ক পাউডার মিশিয়ে মিক্সচারে ব্লেন্ড করে নিন।

এবার তুলা দিয়ে মুখে—হাতে, গলায় লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে কুসুমগরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন।

বরফ ঠান্ডা পানিতে এক টুকরো কাপড় ভিজিয়ে তা রোদে পোড়া জায়গায় চেপে রাখুন। সামান্য সময়ের ব্যবধানে বেশ কয়েকবার এভাবে করুণ। দিনে কয়েকবার করুণ।

* দুধের প্রোটিন রোদে পোড়া ত্বকের ক্ষেত্রে বিশেষ উপকারী। ১ কাপ মাঠা তোলা দুধ ও চার কাপ পানি মিশিয়ে এতে বরফকুচি দিন। ১৫—২০ মিনিট ধরে এ মিশ্রণটি বারবার লাগান। পরে ২ থেকে ৪ ঘন্টা অন্তর এ মিশ্রণটি ব্যবহার করুণ। কিছুদিনের মধ্যেই দেখবেন ত্বকের পোড়াভাব উঠে গিয়ে ঝকঝকে হয়ে উঠেছে।

এছাড়া প্রতিদিন ৮ ঘন্টা ঘুমান। নিজেকে টেনশনমুক্ত রাখার চেষ্টা করুণ।

রাতে শুতে যাওয়ার আগে ভিটামিন ‘ই’ যুক্ত ভালো ক্রিম দিয়ে মুখ ম্যাসাজ করুন। এটা খুবই উপকারী।

গরমে ত্বকের পরিচর্যা

বাংলাদেশের উপর দিয়েই চলে গেছে কর্কটক্রান্তি রেখা। সূর্য তার বর্ষ পরিক্রমায় উত্তরে কর্কটক্রান্তি থেকে মকরক্রান্তি পর্যন্ত ঘোরাফেরা করে। ফলে বছরের বেশিরভাগ সময় এ অঞ্চলে গরম থাকে। বাংলাদেশেও এজন্য বছরের আট মাস থাকে গরম। আর গ্রীষ্মকাল, অর্থাৎ এখন তো কথাই নেই। এই আবহাওয়ায় সবচেয়ে বিপদে পড়তে হয় ত্বক নিয়ে। রোদের তাপে ও গরমের ঘামে ত্বক সবচেয়ে নাজুক হয়ে পড়ে। প্রশ্ন ওঠে কি করে এই সময়ে ত্বক মসৃণ, সতেজ ও উজ্জ্বল রাখা যায়?

ত্বকের সজীবতাই সাধারণ ভাবে একজনকে উদ্ভাসিত করে। আদর্শ ত্বক কাকে বলবেন। যে ত্বক পেলব অথচ টানটান, সজীব ও সতেজ তাই আদর্শ । ত্বকের এই সজীবতা হারালে আপনার স্বাভাবিক বয়স থেকে বেশি বয়সী মনে হতে পারে । গরমে ত্বকের ঠিক এই ক্ষতিটিই করে। কিন্তু ইচ্ছা করলেই আপনি ত্বকের স্বভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে পারেন।

গরমে ত্বকের সবচেয়ে ক্ষতি করে ঘাম। ঘামের সঙ্গে শরীরের তেলগ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরিত হয়। অতিরিক্ত তেল নিঃসরণের ফলে ত্বক চটচটে। বাইরের ধুলাবালি আটকে যায় সহজেই। বিশেষ করে মুখমন্ডলের ত্বক মলিন হয়ে যায়। উস্কোখুস্কো ভাব আসে চেহারায়। অথবা রোদে পোড়া তেল চটচটে এক কিম্ভূতকিমাকার চেহারা হয়। ফলে এই তেল তেলে ভাবটা কাটানোই বড় হয়ে দাঁড়ায় নিজেকে সজীব ও সতেজ চেহারায় উদ্ভাসিত করার বেলায়। তাহলে কি করে মুখমণ্ডলের এই তেলতেলে ভাব কাটাবেন?

এ প্রশ্নের মীমাংসার আগে ত্বকের পরিচর্যার জন্য প্রথমেই  প্রয়োজন পানি। যেহেতু গরমে ঘাম বেশি হয়, তাই শরীর থেকে বেশি পরিমাণে বেশি পরিমাণে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে তারা স্বাভাবিক লাবন্য হারিয়ে ফেলে। এ জন্য যতটা পরিমাণ সম্ভব ততটা বেশি বেশি পানি পান করুন। মনে রাখবেন গরমের সময় যত বেশি পানি পান করবেন তত ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল থাকবে। এছাড়াও সময় পেলেই মুখমণ্ডল পানির ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সম্ভব হলে হাতের কনুই ও হাঁটু পর্যন্ত পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সম্ভব হলে মুখমন্ডলে পানির ঝাপটা জাপটা দেয়া এবং হাত ও পা ধোয়ার পর নরম তোয়ালে দিয়ে পানি মুছে ফেলুন। সম্ভব হলে মুয়খমন্ডল টিস্যু পেপার দিয়ে হালকা করে মুছে নেবেন প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর।

মুখ ধোয়ার ক্লিনজিং বা ফেস ওয়াশের ব্যবহার এখন বেশ এসব দিয়ে বার বার মুখ ধোয়ায় চেয়ে দিনে রাতে এক বা দু;বার ধোয়া ভাল। বাকি সময় শুধু পানি দিয়ে মুখ ধোয়াই উত্তম। ফেস ওয়াশের বদলে ঘরেইব তৈরি করে নিতে পারেন মুখমন্ডল ধোয়ায় উপকরণ। মেথিগুঁড়া, চন্দনের গুঁড়া এতে ভাল কজা দেয়। সুবিধার জন্য এগুলোর গুড়া ভাল কাজ দেয়। সুবিধার জন্য এগুলো গুঁড়া করে আলাদা আলাদা কৌটায় রেখে দিতে পারেন। মুখ ধোয়ার আগে এগুলো  অল্প অল্প করে নিয়ে পানিতে গুলে হাল্কা করে মুখে লাগান  । এরপর দশ—পনেরো মিনিট অপেক্ষা করে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। টিস্যু পেপার বা নরম তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। দেখবেন ত্বকের তেলতেলে ভাব দূর হয়েছে।  আর বাইরের কার না বেরুতে হয় বর্তমানে সময়ে তো আর শুধু ঘরে বসে কাটাতে পারেন না। তাই বাইরে বেরুলে তো ত্বকে পোড়া ভাব আসবেই এই গরমের রোদে। এজন্য বাজারে রয়েছে হাজারো রকমের সান সান স্ক্রীন। কিন্তু এ গুলোর রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া তো আছে না কিছু থাকেই। তা ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন এমন উপকরণ যা দিয়ে মুখমণ্ডল ধুয়ে নিলে রোদে পোড়া ভাব কমে যায়।

এই ফেস প্যাকটি তৈরি করতে লাগবে, টক দই, লেবুর রস ও মধু ও সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে দশ—পনেরো মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন ঠান্ডা পানি দিয়ে। এ ছাড়াও এই গ্রীম্মকালে শসা ও আলু পাতলা চাক করে কেটে লেবুর রস মিশিয়ে মুখমণ্ডলে লাগিয়ে দশ—পনেরো মিনিট অপেক্ষা করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩—৪  দিন এ কাজটি করুন। দেখবেন আপনার ত্বক সতেজ সজীব ও সুন্দর হয়ে উঠছে।

ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন

প্রসাধনীর মধ্যে কোন ভিটামিন থাকা দরকার এবং কেন দরকার সেটার ধারণা থাকা প্রয়োজন।

ভিটামিন এঃ যেসব প্রসাধনীতে ‘রেটিন এ , থাকে সেগুলো ত্বকের জন্য ভালো। বয়সজনিত দাগ দূর করতে ও ত্বক টান টান রাখতে রেটিন এ’র  জুড়ি নেই।

ভিটামিন বিঃ ভিটামিন বি—৩ না নায়াসিন ত্বকের রঙ উজ্জ্বলরাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন বি—৫ চুল উজ্জ্বল, নরম ও সুন্দর রাখে।

ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি  অ্যান্টি—অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। ফ্রি রেডিক্যাল

ড্যামেজ হওয়া থেকে ত্বককে  রক্ষা করে।

ভিটামিন ডিঃভিটামিন ডি সোরিয়াসিস রোগে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু স্বাভাবিক ত্বকে কিভাবে কাজ করে এ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।

ভিটামিন ইঃ ভিটামিন ই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে । সুন্দর ত্বকের জন্য ভিটামিন ই জরুরী। কিন্তু কোনো প্রসাধনে তার পরিমাণ শতকরা ৫ ভাগ হতে হবে।

মেয়েদের তারুণ্য ধরে রাখতে ত্বকের যত্ন ও পরামর্শ

শীতে মেয়েদের চুল, মুখের ত্বক, হাত—পা সব কিছুরই যত্ন নিতে হয়। তবে শুরুতে ত্বকের ধরণ বুঝে নিতে হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে যত্ন শুরু করতে হবে। গ্লিসারিনযুক্ত সাবান, ক্রীম ক্লেনজার, ক্লেনজিং ওয়াইপাস ও তেলসমৃদ্ধ ক্লেনজার ব্যবহার করা যেতে পারে মুখ পরিস্কার করতে।

শীতে ফোমিং ক্লেনজার বা ডিম ক্লিন ক্লেনজার ব্যবহার না করাই ভালো। ত্বক রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। তৈলাক্ত ত্বক হলে হালকা ময়েশ্চারাইজার আছে, এমন ক্লেনজার ব্যবহার করতে হবে। ত্বকে তেলের ভারুসাম্য রাখতে হবে।

বাইরে বের হওয়ার আগে ময়েশ্চারাইজার—সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। স্টিকি ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করে ময়েশ্চারাইজার যুক্ত কমপ্যাক্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। স্যাটিন লিপস্টিক, ফ্রস্টেড লিপস্টিক এই সময়ে ঠোঁটকে বাড়তি সৌন্দর্য এনে দেবে। লিপবাম ব্যবহার করলে দেখে নিন তা অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিরোধক কি না।

রাতে বাসায় ফিরে ভালোভাবে ত্বক পরিস্কার করে নিন।  দুধ, মধু, কাঁচা হলুদ দিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখ, ঘাড়, হাত—পায়ে ব্যবহার করতে পারেন। খেয়াল রাখবেন, এসব উপাদান আপনার ত্বকে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে কি না। এরপর ভালো মানের ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম মুখে ব্যবহার করুন। ঠোঁট ফাটার প্রবণতা থাকলে নারকেল তেল, গ্লিসারিন বা দুধের সর লাগিয়ে রাখুন।

বাসায় ফিরে হালকা গরম পানিতে একটু লবণ, শ্যাম্পু মিশিয়ে ১০—১৫ মিনিট হাত—পা ডুবিয়ে রাখুন। পায়ের গোড়ালি ঝামা দিয়ে ঘষে নিন। নরম ব্রাশ দিয়ে হাত ও পায়ের ত্বক আলতো করে ঘষে নিন। দুই দিন অন্তত এটি করতে হবে। ১৫ দিন অন্তর বিউটি পার্লারে গিয়ে ম্যানিকিওর—পেডিকিউর করাতে হবে।

শীতে হাত—পায়ের উপযোগী ভালো কোনো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুণ। পা ফাটা বা হাতের তালুর ত্বক রুক্ষ হয়ে গেলে গ্লিসারিন, ভ্যাসলিন, ভিটামিন ই ক্যাপসুল লাগিয়ে রাখুন সারা রাত। মোজা পরেও ঘুমাতে পারেন। তবে বেশি সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আরেকটি বিষয় হলো, গোসলের পরপরই সারা শরীরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ধুলোবালু বা ময়লা জমে চুলের ত্বকে। মৃদু ধরনের (মাইন্ড) শ্যাম্পু ব্যবহার করুণ প্রতিদিন। শীতে  আসল কাজ হলো চুল পরিস্কার রাখা। তাহলে খুশকিও দেখা দেবে না। সপ্তাহে এক দিন তেল দিয়ে মাথার ত্বক ম্যাসাজ করতে হবে। ময়েশ্চাতাইজার যুক্ত শ্যাম্পু ও ময়েশ্চারাইজার যুক্ত কন্ডিশনার ব্যবহার করুন চুলে। শীতে মেহেদী বা হেনা সরাসরি চুলে না দিয়ে তাতে টকদই মিশিয়ে নিতে পারেন। এ ছাড়া মেয়োনেজ, পাকা কলা ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশি করে পানি খেতে হবে। শীতে শাক—সবজি, ফলমূল খেলে ত্বক এমনিতেই ভালো থাকবে। আরও পড়তে পারেন : খুশকি মুক্ত চুলের জন্য

ছেলেদের তারুণ্য ধরে রাখতে ত্বকের যত্নে

সাধারণত ছেলেরা ত্বকের বিষয়ে উদাসীন থাকে। ত্বক ফেটে যায়, রুক্ষ তো হয়ই। সকালে ভালো কোনো ময়েশ্চারাইজার যুক্ত ক্লেনজার দিয়ে মুখ পরিস্কার করতে হবে। দুই দিন অন্তর ক্রাবিং করতে হবে।

শীতে ১৫—২০ এসপিএফ-যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। মুখ অবশ্যই হালকা গরম পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। খুব ঠান্ডা পানি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর ।

বাসায় ফিরে মসুর ডাল, কাঁচা হলুদ, কমলার খোসা ও নিমপাতা দিয়ে তৈরি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। সম্ভব হলে প্রতিদিন ব্যবহার করুন।

পেস্তা বাদামের পেস্ট তৈরি করে সঙ্গে দুধ মিশিয়ে সপ্তাহে এক দিন ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া জলপাই পেস্টের সঙ্গে নারকেল তেল, মধু ও পানি মিশিয়ে প্রতিদিন মুখ, হাত ও পায়ে ব্যবহার করুন। এটি ভালো ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।

সপ্তাহে এক দিন ম্যানিকিউর – পেডিকিউর করতে পারেন। বাড়িতে হালকা গরম পানিতে হাত—পা ভিজিয়ে ঘষলেও মরা ত্বক পরিস্কার হবে।

মাসে একবার পার্লারে গিয়ে ফেসিয়াল ও ম্যানিকিউর-পেডিকিউর করবেন।   দুধের সর ঠোঁটে লাগাবেন। এতে ঠোঁট নরম হবে। রাতে ঘুমানোর সময় ময়েশ্চরাইজার যুক্ত লোশন ও ক্রিম মুখ ও হাত—পায়ে ব্যবহার করতে হবে।

চুল প্রতিদিন পরিস্কার করা প্রয়োজন। সপ্তাহে এক দিন তেল ব্যবহার করবেন। শীতে চুলের জেল এড়িয়ে যাওয়া ভালো। 

এরপর পড়ুন : চোখের যত্ন

লেখকঃ চৌধুরী দীন ইসলাম

ডিয়ার রিডার্স, তারুণ্য ধরে রাখার উপায় লেখাটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই লেখককে ধন্যবাদ দিতে ভূল করবেন না।  

Image by Adina Voicu from Pixabay

For more update please follow our Facebook, Twitter, Instagram , Linkedin , Pinterest , Tumblr And Youtube channel.

Leave a Comment