স্ত্রীর উপর নির্যাতন নয়, সদাচরণ করুণ (উপদেশ)

লেখক তাঁর গল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্ত্রীর নির্যাতনের স্টীম রোলালের গল্প ও স্ত্রীর উপর নির্যাতন না করে ভালো আচরণের কোরআন হাদিসের বাণী তুলে ধরেছেন। তাহলে চলুন লেখকের উপদেশটি পড়া শুরু করি…

উপদেশমূলক গল্প : স্ত্রীকে নির্যাতন নয় সদাচরণ করুন!

স্ত্রীর উপর নির্যাতনপবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক বলেছেন, তোমরা তাদের সঙ্গে অর্থাৎ স্ত্রীদের সঙ্গে সদাচারের সাথে জীবন যাপন করো। হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ পাক এই আয়াতে স্ত্রীদের সাথে সদাচার ও ভাল ব্যবহার করতে সুপারিশ করেছেন।

আচ্ছা! বলুন তো, কোনো ডিসি, এস,পি প্রধানমন্ত্রী কিংবা কমান্ডার ইন চিফ যদি আপানাকে এই মর্মে পত্র লিখেন যে, দেখ অমুক! তোমার স্ত্রীর সাথে তুমি ভালো ব্যবহার করবে। কারণ তোমার স্ত্রী আমার মেয়ের বান্ধবী। ওরা এক সাথে পড়াশোনা করেছে। তুমি যদি তোমার স্ত্রীর উপর কোনোরূপ নির্যাতন করো, তাকে কষ্ট দাও, তাহলে মনে রেখো, আমি একজন ডিসি, এসপি, প্রধানমন্ত্রী কিংবা কমান্ডার ইন চিফ। বলুন তো এই পত্র পাওয়ার পর আপনি কি আপনার স্ত্রীর সাথে দুর্ব্যবহার করার সাহস পাবেন? আপনি কি তখন পারবেন তাকে নির্যাতন করতে? না, পারবেন না। কারন যখন আপনি তাকে কষ্ট দিতে চাইবেন তখনই আপনার মনে হবে ঐ ডিসি, এসপি, প্রধানমন্ত্রী কিংবা কমান্ডার ইন চিফের পত্রের কথা। মনে হবে স্ত্রীকে নির্যাতন করার মারাত্মক পরিণতির কথা। তাই আপনি তখন স্ত্রীকে আদর-সোহাগ করে বলবেন-বেগম সাহেবা!

আমার কাছে এসে তোমার কোনো কষ্ট-তকলীফ হচ্ছে না তো? যদি হয় তবে আল্লাহর ওয়াস্তে আমার কাছেই বলো, ডিসি, এসপি, প্রধানমন্ত্রী কিংবা কমান্ডার ইন চিফকে কিছুই বলোনা। কারণ তুমি যদি তাকে কিছু বলো, তাহলে তিনি আমার বারোটা বাজিয়ে ছাড়বেন!

অতএব, হে আমার ভাই! খুব লক্ষ্য করুণ যে, স্বয়ং রাব্বুল আলামীন মহাপ্রতাপশালী আল্লাহ পাক তার বান্দীদের সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন এবং সুপারিশ করে বলেছেন- তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সদাচার, শিষ্ঠাচারের সাথে জীবন যাপন করো, ভালো ব্যবহার করো। তারা যেমন তোমাদের স্ত্রী, সেই সঙ্গে তারা আমার বান্দীও বটে। অতএব তোমরা এদিকে সবিশেষ খেয়াল রেখো। শোনো, স্বয়ং তোমাদের খোদা তোমাদের নিকট সুপারিশ করছেন যে, হে আমার বান্দারা! আমার বান্দীদের সঙ্গে তোমরা ভালো ব্যবহার করো।

আরও পড়ুন : এক বিধবা মেয়ের বিয়ের গল্প

হযরত থানবী (রহঃ) আরো বলেন, সেই ব্যক্তি কতই না নির্লজ্জ ও বেহায়া যে আল্লাহ পাকের এহেন সুপারিশের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করে না। বরং তার সুপারিশকে প্রত্যাখ্যান করতঃ স্বীয় স্ত্রীর উপর নির্যাতনের ষ্টীম রোলার চালায়। স্ত্রীকে সে এতই জ্বালা-যন্ত্রণা দেয় যে, দুঃখে তার কলিজা ফেটে যায়। সর্বদা জ্বলে পুড়ে মরতে থাকে অশান্তির অনলে।

মনে রাখবেন, একজন আদর্শ স্বামী কখনোই তার অর্ধাঙ্গিনীকে যখন তখন এবং কারণে অকারণে যে কোনো ছুতো ধরে মারধর ও অশ্লীল গালি-গালাজ করতে পারে না। আল্লাহ মাফ করুণ, কোনো কোনো স্বামী তো এ ব্যাপারে সীমা অতিক্রম করে স্ত্রীকে পশুর মতো পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দেয় এবং স্ত্রীর পিতা-মাতাসহ চৌদ্দগোষ্ঠী তুলে গালিগালাজ করতে থাকে। বলুন তো, এরা নরাধম পশু ছাড়া আর কি? এমন আচরণ আদর্শ স্বামীর জন্য নিতান্তই অশোভনীয়।

নবী করীম (সাঃ) বলেন,

তোমরা নারীদের চেহারায় প্রহার করবে না এবং অশ্লীল গালি দেবে না। (আবু দাউদ)

আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে যাবতীয় অশোভন আচরণ থেকে হেফাযত করুণ। আমীন!!    

লেখকঃ মাওলানা মুহাম্মদ মুফীজুল ইসলাম। ( আদর্শ স্বামী স্ত্রী ২ ) 

এরপর পড়ুন>> এক নির্যাতিতা স্ত্রীর ফরিয়াদঃ একটি ঘটনা।

For more update please follow our Facebook, Twitter, Instagram , Linkedin , Pinterest , Tumblr And Youtube channel.

Leave a Comment